‘স্যার অফিস করে সপ্তাহে ৩ দিন, বাকি দিনগুলো প্রক্সি দেই আমি’
মো: নুরুজ্জামান, মানিকগঞ্জ
প্রকাশ: ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:২৫ পিএম
স্যার সপ্তাহের শনি, সোম ও মঙ্গলবার অফিস করেন। বাকি দিনগুলোতে আমি প্রক্সি দেই- এমনটাই দাবি করেন মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার হাবীব ইউসুফ রহমত উল্লাহর সহকারী সিরাজুল ইসলাম। তার পদবি উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার। তিনি পেষণে দীর্ঘদিন ধরে মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে কর্মরত রয়েছেন। তবে চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. হাবীব ইউসুফ রহমত উল্লাহর দাবি তিনি সপ্তাহে ৬ দিনই ডিউটি করেন।
জানা গেছে, মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে চক্ষু বিশেষজ্ঞ কনসালটেন্ট হিসেবে হাবীব ইউসুফ রহমত উল্লাহ দায়িত্বরত রয়েছেন। অথচ তিনি সপ্তাহে ৩ দিন এখানে ডিউটি করেন। এতে হয়রানির শিকার হচ্ছেন অসংখ্য রোগী। তার অনুপস্থিতিতে চক্ষু সমস্যার রোগী দেখছেন উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার সিরাজুল ইসলাম। সাটুরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার হিসেবে সিরাজুল ইসলামের পোস্টিং রয়েছে। অথচ দীর্ঘদিন ধরে মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে পেষণে থেকে চক্ষু সমস্যার রোগীর প্রেসক্রিপশন করে যাচ্ছে।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. হাবীব ইউসুফ রহমত উল্লাহ ঢাকা থেকে সপ্তাহে ৩ দিন আসেন। এতে আমাদের হয়রানি হতে হয়। তার অনুপস্থিতিতে যিনি রোগী দেখেন তিনি চক্ষু সম্পর্কে কিছুই জানেন না। অথচ তিনি ডাক্তারের পরিবর্তে চক্ষুর চিকিৎসা দিচ্ছেন।
সরেজমিন দেখা যায়, চক্ষু বিশেষজ্ঞ কনসালটেন্ট হাবীব ইউসুফ রহমত উল্লাহ মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে তার কক্ষে নেই। উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার সিরাজুল ইসলাম লিটন নামের এক রোগীকে প্রেসক্রিপশন করে দিচ্ছেন। লিটন নামের ওই রোগী বলেন- আমার চোখ দিয়ে পানি পড়ে এবং ফুলে গিয়েছে। তাই ডাক্তার দেখিয়ে গেলাম। চিকিৎসা নিতে আসা আরেক রোগী আকেল আলীর চোখের সমস্যার চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন সিরাজুল ইসলাম।
উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার সিরাজুল ইসলাম বলেন, স্যার সপ্তাহে শনি, সোম ও মঙ্গলবার আসেন। অন্যান্য দিনগুলোতে আমি প্রক্সি দেই। স্যারের অনুমতিতেই আমি প্রেসক্রিপশন করি। তিনি নিষেধ করলে প্রেসক্রিপশন করব না। আপনি শনিবার এসে স্যারের সঙ্গে কথা বলেন।
মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের চক্ষু বিশেষজ্ঞ কনসালটেন্ট হাবীব ইউসুফ রহমত উল্লাহর সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি ওএসডিতে আছি। আমি মহাখালী এবং মানিকগঞ্জ হাসপাতালে সংযুক্ত রয়েছি। তবে আমি মানিকগঞ্জে ৬ দিনই ডিউটি করি।
গত ৩ দিন আপনাকে মানিকগঞ্জ হাসপাতালে পাওয়া যায়নি- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমি অসুস্থ।
ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা অবগত আছেন কিনা- এমন প্রশ্নে তিনি এই প্রতিবেদককে শনিবার হাসপাতালে গিয়ে দেখা করতে বলেন।
মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. বাহাউদ্দীন বলেন, চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার হাবীব ইউসুফ রহমত উল্লাহর সপ্তাহে ৩ দিনই ডিউটি করার কথা। কারণ তিনি ওএসডিতে রয়েছেন।
উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার রোগীদের প্রেসক্রিপশন দিতে পারেন কিনা- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আপনারা লিখিত বক্তব্য দেন। আমরা প্রয়োজনে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।