নরসিংদীতে দাম্পত্য কলহের জেরে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে চট্টগ্রামগামী তূর্ণা এক্সপ্রেস ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে আত্মহত্যা করেছেন মো. সাইদুর রহমান রহিদ ওরফে বাবু ইসলাম নামে এক যুবক।
নরসিংদী রেলস্টেশনের পুরাতনপাড়া ব্রিজ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে পুলিশ ও নিহতের স্বজনরা রেললাইন থেকে মরদেহ উদ্ধার করেন।
নিহত মো. সাইদুর রহমান রহিদ ওরফে বাবু ইসলাম (৩৬) ঢাকা দক্ষিণ কাফরুল এলাকার মো. ইসলাম শেখের ছেলে। তিনি বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে আইটি প্রোভাইডার (ইন্টানেট সেবা বিভাগে) চাকরি করতেন।
নিহতের স্বজনরা জানান, গত ৭ বছর পূর্বে ঢাকার কাফরুল এলাকার বাবু ইসলামের (৩৫) সঙ্গে নরসিংদী সদর উপজেলার ঘোড়াদিয়া সোনাতলা এলাকার রহমান মুন্সীর মেয়ে তোহরার বিয়ে করেন। তাদের ৬ বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। পারিবারিক বিরোধের জের ধরে সম্প্রতি তোহরা বেগম তার বাবার বাড়িতে চলে আসেন। বুধবার স্ত্রী তোহরাকে নিতে নরসিংদী আসেন স্বামী বাবু ইসলাম। কিন্তু স্ত্রী তার সঙ্গে যেতে রাজি হয়নি। নিহত বাবু ইসলামকে ঘরজামাই থাকার প্রস্তাব দেয় তার স্ত্রী। এতে রাজি হয়নি বাবু।
স্ত্রীকে বাড়ি ফিরিয়ে নিতে ব্যর্থ হয়ে স্ত্রী ও তার ভাইদের জানিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেয়। পরে রাত সাড়ে ১২টার দিকে চট্টগ্রামগামী তূর্ণা এক্সপ্রেস ট্রেনের নিচে পড়ে আত্মহত্যা করেন। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে নরসিংদী রেলস্টেশনের পুরাতনপাড়া ব্রিজ এলাকায় বাবুর ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে। পরে রেল পুলিশ এসে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তর জন্য লাশ সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে।
নিহতের ভাই মামুন জানান, অভিমান করে আমার ভাবি তার বাবার বাড়িতে চলে আসেন। আমার ভাই ভাবিকে নিতে নরসিংদী আসেন। কিন্তু ভাবি আমার ভাইকে ঘরজামাই থাকার প্রস্তাব দেয়। এতে সে রাজি হয়নি। পরে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে ট্রেনের নিচে পড়ে মারা যায়। আমি বুধবার ভাবির হাতেপায়ে ধরে অনুরোধ করেছি, আমার ভাইকে বাঁচাতে; কিন্তু তিনি বাঁচানোর চেষ্টা করেননি। ভাবি শুধুমাত্র ভাইয়ের মোবাইলে ফোন করলেই আমার ভাই প্রাণে বেঁচে যেত; কিন্তু তিনি তা না করে ভাইকে মৃত্যুর পথে ঠেলে দিয়েছেন।
নিহতের অপর ভাই লুৎফুর রহমান বলেন, স্ত্রীর সঙ্গে কলহের জেরে আমার ভাই আত্মহত্যা করেছে। তিনি সেটা ফেসবুক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে লিখে গেছেন। ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আমরা বিচার দাবি করছি।
রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ শহীদুল্লহ বলেন, রাত সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী তূর্ণা এক্সপ্রেস ট্রেনে কাটা পড়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। তার মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত শুরু হয়েছে।