Logo
Logo
×

সারাদেশ

কেরানীগঞ্জে ওয়ারিশ সনদ জাল করে ৪ কোটি টাকার জমি নামজারি

Icon

আবু জাফর, কেরানীগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৫৩ এএম

কেরানীগঞ্জে ওয়ারিশ সনদ জাল করে ৪ কোটি টাকার জমি নামজারি

ফাইল ছবি

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের দীঘিরপাড় এলাকার শুভাঢ্যা মৌজায় ৩২ শতাংশ জমি জাল ওয়ারিশান সনদে নামজারি করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। 

ওই জমির বাজারমূল্য প্রায় ৪ কোটি টাকা। আরএস রেকর্ডীয় মালিককে ভুয়া ‘পিতা’ বানিয়ে ২০০৬ সালে দুই ভাইয়ের নামে নামজারি হয়েছে। তারা হলেন, মহাদেব মন্ডল ও নন্দলাল সরকার। নন্দলাল ভারতীয় নাগরিক। তিনি শিলিগুড়িতে পরিবার নিয়ে বসবাস করেন।

আইন অনুযায়ী ভারতীয় কোন নাগরিকদের বাংলাদেশে জমির মালিকানা হওয়ার সুযোগ নেই।

কাগজপত্র ঘেটে দেখা যায়, শুভাঢ্যা মৌজার আরএস ১১৮২ খতিয়ানের ৩টি দাগে (দাগ নং ২৯৭, ১০৩৭, ১০৩৯) ৯৬ শতাংশ জমি লক্ষীবালা দাসা, নরেন্দ্র মন্ডল ও জ্ঞানেন্দ্র মন্ডল রেকর্ডীয় মালিক। হারাহারিভাবে ৩ জন ৩২ শতাংশ করে জমি পান। রেকর্ডীয় মালিক জ্ঞানেন্দ্র মন্ডল অবিবাহিত অবস্থায় মারা যান। কিন্তু জ্ঞানেন্দ্রকে ‘পিতা’ দাবি করে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছ থেকে ভুয়া ওয়ারিশান সনদ নিয়ে ২০০৬ সালে মহাদেব ও নন্দলালের নামে নামজারি হয়।

যদিও নন্দলাল ভারতীয় নাগরিক। তথ্যানুসন্ধানে দেখা যায়, মহাদেব ও নন্দলালের বাবার নাম মরন সরকার ওরফে মরন মিস্ত্রি। মহাদেবের ন্যাশনাল আইডি কার্ড, বাড়ির হোল্ডিং ট্যাক্স, বিদ্যুৎ বিলের কপিতে মহাদেব বাবার নাম মরন মিস্ত্রি লেখা রয়েছে। অপরদিকে নন্দলালের শিলিগুড়ি মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন ও ভারতীয় ভোটার কার্ডে বাবার নাম মরন সরকার লেখা রয়েছে।

কিন্তু মহাদেব জীবিত থাকাবস্থায় নিজে ও ভারতে অবস্থানরত ভাই নন্দলালের নামে, জ্ঞানেন্দ্রকে পিতা সাজিয়ে ৩২ শতাংশ জমি নামজারি করে নেন।

এ বিষয়ে অভিযোগের পর এসিল্যান্ডের নির্দেশে চলতি বছেরের ২৬ জুলাই বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেন শুভাঢ্যা ইউপি চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন। প্রতিবেদনে তিনি জ্ঞানেন্দ্র ও মরন সরকারকে পৃথক ব্যক্তি উল্লেখ করেন।

জ্ঞানেন্দ্রের ভাতিজা (চাচাতো ভাইয়ের ছেলে) উকিল মন্ডল জানান, তিনি তো অবিবাহিত অবস্থায় মারা গেছেন। তাহলে তার ছেলে হয় কি করে? তাছাড়া যারা মিথ্যা পরিচয় দিয়ে নামজারি করেছে তাদের বিভিন্ন ডকুমেন্ট আমরা সংগ্রহ করেছি। সমস্ত জায়গায় তাদের পিতা মরন সরকার ওরফে মরন মিস্ত্রি। তারা ভুয়া ওয়ারিশান সনদ দিয়ে উনার (জ্ঞানেন্দ্রের) ৩২ শতাংশ জমি নামজারি করেছে। যার কেস নং ৬৮৫৭/২০, জোত নং ৪৩/২০। মহাদেব মারা গেছেন। এখন তার দুই ছেলে সুজিত ও অজিত এই জমি দখল করে রেখেছে। এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে আমরা সহকারী কমিশনার কার্যালয়ে অভিযোগ করেছি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সুজিত বলেন, আমাদের জমি আমরাই তো সব দেখবো। আমার দাদা জ্ঞানেন্দ্র মন্ডল রেকর্ডীয় মালিক। সেই জমি ওয়ারিশান সনদ দিয়ে আমার বাবা ও চাচা নামজারি করেছে। কিন্তু বাপ-চাচার রেকর্ডপত্রে দাদার নাম হিসেবে মরন সরকার ওরফে মরন মিস্ত্রি লেখা রয়েছে। আমার দাদার নাম জ্ঞানেন্দ্র ও মরন মিস্ত্রি দুটোই ছিল। 

এ বিষয়ে দক্ষিণ রাজস্ব সার্কেলের সহকারী কমিশনার রইস আল রেজোয়ান বলেন, এ ঘটনায় একটি মিসকেস চলমান রয়েছে। কেউ যদি কারো ভুয়া পরিচয় দিয়ে জমি নামজারি করেন তাহলে ৭ বছরের সাজার বিধান রয়েছে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম