মাকে হত্যা করে লাশ ফ্রিজে, তিন দিনের রিমান্ডে ছেলে
বগুড়া ব্যুরো
প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১১:০০ পিএম
বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় হাত খরচের টাকা না পেয়ে মা উম্মে সালমা খাতুনকে হত্যার পর লাশ ডিপ ফ্রিজে রাখার মামলায় ছেলে সাদ বিন আজিজুরকে (১৯) তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুমাইয়া সিদ্দিকা বুধবার সন্ধ্যায় এ আদেশ দেন।
দুপচাঁচিয়া থানার ওসি ফরিদুল ইসলাম এ তথ্য দিয়েছেন।
পুলিশ ও এজাহার সূত্র জানায়, সাদ বিন আজিজুর বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার জয়পুরপাড়ার মাদ্রাসাশিক্ষক আজিজুর রহমানের ছোট ছেলে। সে দারুস সুন্নাহ কামিল মাদ্রাসায় আলিম দ্বিতীয় বর্ষে পড়াশোনা করে। সাদ অনলাইন জুয়া, মাদকাসক্ত ও প্রেমে জড়িয়ে পড়ে। হাত খরচের টাকা ও বাড়ি থেকে টাকা চুরি করা নিয়ে মা উম্মে সালমা খাতুনের সঙ্গে তার বিরোধ হয়। এ ক্ষোভ থেকে সে মাকে হত্যার পরিকল্পনা করে।
পরিকল্পনা অনুসারে গত সাদ গত ১০ নভেম্বর সকালে নাস্তা না করেই বাড়ির বাহিরে চলে যায়। সে মাদ্রাসায় না গিয়ে আশপাশে অবস্থান করার পর বেলা সাড়ে ১২টার দিকে বাড়িতে আসে। এ সময় মা বঁটি দিয়ে কুমড়া কাটছিলেন। সাদ পূর্বপরিকল্পনা অনুসারে পেছন থেকে মায়ের নাক ও মুখ চেপে ধরে। এ সময় ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে বঁটি দিয়ে সাদের তর্জনী আঙুল কেটে যায়।
এরপরও সে দুই হাত দিয়ে নাক ও মুখ চেপে ধরে শ্বাসরোধে মায়ের মৃত্যু নিশ্চিত করে। এ হত্যার ঘটনা ডাকাতি হিসেবে প্রচার করতে ওড়না দিয়ে মায়ের দুই হাত-পা বেঁধে লাশ ডিপ ফ্রিজে রাখে।
ডাকাতির প্রমাণ হিসেবে কুড়াল দিয়ে আলমিরাতে কয়েকটি কোপ দেয়। এরপর প্রধান ফটকে তালা দিয়ে বাহিরে চলে যায়। কিছুক্ষণ পর বাড়িতে ফিরে মা সালমাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে বাবা আজিজুর রহমানকে ফোনে ডেকে আনে। পরে দুপচাঁচিয়া থানা পুলিশ উম্মে সালমা খাতুনের লাশ উদ্ধার করে বগুড়া শজিমেক হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
র্যাব-১২ বগুড়া কোম্পানির সদস্যরা ১১ নভেম্বর মধ্য রাতে সাদকে পার্শ্ববর্তী কাহালু উপজেলার পাঁচপীর আড়োবাড়ি এলাকায় দাদা রমজান মোল্লার বাড়ি থেকে আটক করেন। জিজ্ঞাসাবাদে সে তার মাকে হত্যার কথা স্বীকার করে। পরে তাকে দুপচাঁচিয়া থানায় সোপর্দ করা হয়।
এ ব্যাপারে বড় ভাই নাজমুস সাকিব দুপচাঁচিয়া থানায় সাদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেছেন।
দুপচাঁচিয়া থানার ওসি ফরিদুল ইসলাম জানান, গৃহবধূ উম্মে সালমা খাতুন হত্যা ও লাশ গুমের মামলার একমাত্র আসামি ছোট ছেলে সাদ বিন আজিজুরকে বুধবার বিকালে বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। স্বীকারোক্তি দিতে অস্বীকার করায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাতদিন রিমান্ড চাওয়া হয়। শুনানি শেষে বিচারক সুমাইয়া সিদ্দিকা তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।