ত্রিভুজ প্রেমের বলি সুমন, জড়িতদের ফাঁসির দাবি
শেরপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩২ পিএম
শেরপুরে ত্রিভুজ প্রেমের বলি কলেজছাত্র সুমন মিয়া (১৭) হত্যায় জড়িতদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। বুধবার সকালে শেরপুর সরকারি কলেজের অসংখ্য সাধারণ শিক্ষার্থী বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ডিসি গেটে ওই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন- সুমনের বাবা মো. নজরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট সাব্বির হাসান, মোর্শেদ জিতু, তৌহিদুর রহমান প্রমুখ। ওই সময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে বক্তব্য রাখেন জেলা আইনজীবী সমিতি ও প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম আধার।
বক্তারা সুমন হত্যার নায়ক রবিউল ইসলাম রবিন ও প্রেমিকার ফাঁসির দাবি করেন। সেইসঙ্গে তারা ওই চাঞ্চল্যকর ঘটনায় জড়িত অন্যদের দ্রুত শনাক্ত ও গ্রেফতারসহ বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান।
এদিকে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আদালতে সুমন হত্যার দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন অভিযুক্ত রবিন।
জবানবন্দি প্রদানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক মো. জিয়াউর রহমান।
সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইকবাল মাহমুদের আদালতে দেওয়া দীর্ঘ জবানবন্দিতে রবিন প্রেমিকাকে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে সুমনকে ডেকে শহরের সজবরখিলায় তার বাসায় নিয়ে কোমল পানীয়ের সঙ্গে ঘুমের ট্যাবলেট মিশিয়ে সেবন করিয়ে নিস্তেজ করা হয়। একপর্যায়ে দুজনে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে বাসার উঠানে মাচার নিচে মাটি খুঁড়ে পুঁতে রাখে।
সেইসঙ্গে বাসায় থাকা তার মাকেও ঘটনার আগেই ঘুমের ওষুধ মেশানো লাচ্ছি খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখে। এরপর তারা দুজনে ওই ঘটনা ঘটিয়ে বাসার একই কক্ষে রাত্রিযাপন করে বলে বর্ণনা দেয়। জবানবন্দি প্রদানের পর রাতেই তাকে জামালপুর জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
এর আগের দিন ঘাতক প্রেমিকার পুলিশি রিমান্ডের আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে আইনের সঙ্গে সংঘাতে জড়িত শিশু বিবেচনায় গাজীপুরের টঙ্গী কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে ২ দিন জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন শিশু আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ তৌফিক আজিজ।
উল্লেখ্য, গত সোমবার দিবাগত রাতে শহরের সজবরখিলা এলাকার একটি বাড়ির উঠানে মাটিচাপা দেওয়া অবস্থায় কসবা বারাকপাড়া নিমতলা এলাকার হতদরিদ্র কৃষক মো. নজরুল ইসলামের ছেলে কলেজছাত্র সুমন মিয়ার (১৭) লাশ উদ্ধার করা হয়। এর আগে সুমন নিখোঁজের ৬ দিন পর সুমনের বাবার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে শেরপুর সরকারি কলেজের ছাত্রী (১৯) ও তার বাবা বাগরাকসা কাজীবাড়ী পুকুরপাড় এলাকার বাসিন্দা শিক্ষক মো. আজিম উদ্দিনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে ওই ছাত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদে তার আরেক প্রেমিক রবিউল ইসলাম রবিনকে (১৯) ময়মনসিংহ থেকে গ্রেফতার করে এবং তার দেওয়া তথ্য ও দেখানোমতে তার বাড়ির উঠান থেকে সুমনের লাশ উদ্ধার করা হয়।