রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ
হত্যা মামলার পলাতক আসামিও সদস্য
রাঙামাটি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১২ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৫৯ পিএম
চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার পলাতক আসামিও রাঙামাটি পার্বত্য জেলার অন্তর্বর্তী পরিষদের সদস্য পদে নিয়োগ পেয়েছেন। এতে ক্ষুব্ধ রাঙামাটির মানুষ। এলাকায় সৃষ্টি করেছে ব্যাপক তোলপাড়।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার মনোনীতদের বাতিল ঘোষণা করে ৭ নভেম্বর তিনটি পার্বত্য জেলা পরিষদ পুনর্গঠন করে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার। এতে কাজল তালুকদারকে চেয়ারম্যান করে ১৫ সদস্যবিশিষ্ট পুনর্গঠিত রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে জেলার নানিয়ারচর উপজেলার বুড়িঘাট ইউনিয়নের মংখোলা গ্রামের মৃত ননী পুতুল খীসার ছেলে প্রনতি রঞ্জন খীসাকে।
তিনি বুড়িঘাট ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন। প্রণতি নানিয়ারচর থানার একটি হত্যা মামলার আসামি। এতে দীর্ঘদিন ধরে পলাতক ছিলেন তিনি। পুনর্গঠিত অন্তর্বর্তী রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য মনোনীত হওয়ায় বর্তমানে প্রকাশ্য হয়েছেন।
মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে ক্ষোভ প্রকাশ করে রাঙামাটির বিশিষ্ট আইনজীবী রাজীব চাকমা বলেন, সদ্য নিয়োগ পাওয়া অন্তর্বর্তী রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য প্রনতি রঞ্জন খীসা নানিয়ারচর থানার একটি হত্যা মামলার পরোয়ানাভুক্ত আসামি। তিনি এতদিন পলাতক ছিলেন। তার বিরুদ্ধে মামলাটি রাঙামাটির আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। হত্যা মামলায় পরোয়ানাভুক্ত পলাতক আসামি কিভাবে জেলা পরিষদের সদস্য হলেন, তা নিয়ে জনমনে উদ্রেক দেখা দিয়েছে। এতে মানুষ বিস্মিত, উদ্বিগ্ন। তিনি অবিলম্বে প্রনতি রঞ্জন খীসার অপসারণ দাবি জানান।
মামলার সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের ১৭ অক্টোবর নানিয়ারচর বাজারসংলগ্ন বিহারপাড়া এলাকায় শান্ত ওরফে শান্তি চাকমা নামে ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) দলের এক সদস্য দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন। এ ঘটনায় ২০ অক্টোবর নিহতের স্ত্রী রিপনা চাকমা বাদী হয়ে নানিয়ারচর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় ২৯ জন আসামির তালিকায় প্রনতি রঞ্জন খীসা অন্যতম।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নানিয়ারচর থানার ওসি মো. নাজির আলম বলেন, মামলাটির ২৯ জন আসামির মধ্যে প্রনতি রঞ্জন খীসা পরোয়ানাভুক্ত পলাতক আসামি। শুনেছি এখন নাকি তিনি জেলা পরিষদের সদস্য হিসেবে যোগদান করেছেন।
হত্যা মামলার পরোয়ানাভুক্ত পলাতক আসামি এ ধরনের জনগুরুত্বপূর্ণ একটি পদে অধিষ্ঠিত হওয়ায় বিস্ময় প্রকাশ করে ওসি বলেন, মামলার নথিপত্র বিস্তারিত যাচাই করে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে ফোনে যোগাযোগ করা হলে বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে প্রনতি রঞ্জন খীসা বলেন, মামলাটির আসামির তালিকায় তার নাম রয়েছে। তবে এতে তার বিরুদ্ধে অসত্য অভিযোগ করায় পরে বাদীর সঙ্গে আপস-মীমাংসা করা হয়েছিল।