Logo
Logo
×

সারাদেশ

স্বামীকে মৃত উল্লেখ করে মামলা, খোঁজ মিলল সেই যুবকের

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন, ঢাকা উত্তর

প্রকাশ: ১২ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৫৫ পিএম

স্বামীকে মৃত উল্লেখ করে মামলা, খোঁজ মিলল সেই যুবকের

৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ঘটনায় স্বামীকে মৃত বানিয়ে সাভারের আশুলিয়া থানায় মামলা করেন স্ত্রী। এ হত্যা মামলায় আসামি করা হয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৩০ জনকে। মামলায় নিহত ব্যক্তির নাম আল আমিন। তার স্ত্রীর ও মামলার বাদীর নাম কুলসুম।

পুলিশ জানায়, ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় আশুলিয়া থানায় যে হত্যাযজ্ঞ হয়, সেখানকার একজনের পরিচয় ছিল অজানা। সেই অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে নিজের স্বামী আল আমিন দাবি করেন কুলসুম নামের এক নারী। ২৪ অক্টোবর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৩০ জনের বিরুদ্ধে ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা করেন ওই নারী। পরে সেটি ৮ নভেম্বর আশুলিয়া থানায় এজাহারভুক্ত হয়।

তবে পরবর্তীতে কয়েকটি গণমাধ্যম বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। কুলসুমের স্বামী সিলেটের দক্ষিণ সুরমা থানা এলাকায় অবস্থান করছেন- এমন তথ্যের পর র‌্যাবের সহায়তা চাইলে আল আমিনের খোঁজ পায় র‌্যাব। তার সঙ্গে কথা বলে র‌্যাব নিশ্চিত হয় মামলায় মৃত দেখানো আল-আমিন আন্দোলনে নিহত হননি। তিনি বেঁচে আছেন।

মঙ্গলবার ভোরে সিলেট মহানগর পুলিশের দক্ষিণ সুরমা থানার একটি কক্ষে বসে র‌্যাবের কাছে এভাবেই কথাগুলো বলেছেন আল আমিন।

ভুক্তভোগী আল আমিনের বড় ভাই জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমার ভাই বেঁচে আছে। সে তিন দিন আগে আমাকে বলেছে মামলার বিষয়টি। আল আমিন থানায়ও গিয়েছিল, কিন্তু তারা কোনো সমাধানের পথ দেখাতে পারেনি। তাই ভয়ে পালিয়ে বেড়িয়েছে। যখন র‌্যাব বিষয়টি জানতে পারে তখনই ভাইকে সিলেটের দক্ষিণ সুরমা থানায় আসতে বলি। এরপর বাবার সঙ্গে থানার ভেতরে প্রবেশ করেন ভুক্তভোগী আল আমিন। সেখানেই একটি কক্ষে কথা হয় তার সঙ্গে।

আল আমিন হেসে হেসে বলেন- ‘আমি মরিনি। আমি বেঁচে আছি।’

বাদী কুলসুমের ছবি দেখে নিশ্চিত করেন ছবির মানুষটি মামলার বাদী ও তার স্ত্রী কুলসুম। এরপর জানান একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। তবে এসব জানাজানির পর থেকে কুলসুমের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।

আল আমিন বলেন, বাবা-মায়ের অবাধ্য হয়ে মোবাইল ফোনে কথার সূত্র ধরে ভালোবেসে বিয়ে করি কুলসুমকে। ঘরে একটি কন্যা সন্তানও রয়েছে। কয়েক মাস ধরে পারিবারিক কলহ বেড়ে যাওয়ায় সময়টা ভালো যাচ্ছিল না। দেশে গণ্ডগোলের পুরোটা সময় আমি ও আমার স্ত্রী মৌলভীবাজারের জুড়িতে অবস্থান করেছি। সেই সময় আশুলিয়ায় একবারের জন্যও যাইনি। অথচ আমাকে মৃত দেখিয়ে মিথ্যা মামলা করেছে আমার স্ত্রী।

আল আমিন আরও বলেন, আন্দোলনের সময় স্ত্রীর সঙ্গে সাংসারিক বিষয়ে রাগারাগি হয়। পরে কুলসুম তার বাড়িতে চলে যায়। এরপর থেকে তার সঙ্গে আমার কোনো যোগাযোগ হয়নি।

জীবিত ছেলেকে মৃত দেখিয়ে মামলার ঘটনায় হতবাক আল আমিনের বাবা নুরুল ইসলাম। তিনি বলেন, এমনটা হওয়ায় আমাদের পুরো পরিবার এখন আতঙ্কিত। ছেলের বউ কুলসুম কেন এমনটি করেছে তা মাথায়ও আসছে না। বিষয়টি নিয়ে কুলসুম কোনো কথাও বলছে না।

আশুলিয়া থানার ওসি আবু বকর সিদ্দিক বলেন, সিলেটের দক্ষিণ সুরমা থানা থেকে আল-আমিনকে উদ্ধার করার জন্য মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই রাকিব সিলেটে গিয়েছেন। তাকে উদ্ধারের পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

কুলসুমের ব্যাপারে তিনি যুগান্তরকে বলেন, তিনি কোথায় আছেন আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি। তবে মঙ্গলবার বিকাল পর্যন্ত তার কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম