মামলার বাদী চেনেন না উপদেষ্টা বশির উদ্দিনকে
আবু বাসার আখন্দ, মাগুরা
প্রকাশ: ১১ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৫১ পিএম
ঢাকায় ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গুলিতে নিহত মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার সোহান শাহ হত্যা মামলার ৪৯নং আসামি শেখ বশির উদ্দিন ভূঁইয়াকে নিয়ে দেশব্যাপী ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। তবে ওই আসামি সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই মামলাটির বাদী মোছা. সুফিয়া বেগমের।
সন্তান হারানোর বেদনায় কাতর সুফিয়া বেগম কান্নাবিজড়িত কণ্ঠে বলেন, মামলায় যাদের নামই থাকুক, আমি ন্যায়বিচার চাই। চাই আর কোনো মা যেন অকালে সন্তান না হারায়।
রোববার অন্তর্বর্তী সরকারের নতুন চার উপদেষ্টা নিয়োগের পর বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন শপথ নিলে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে দায়েরকৃত ওই মামলাটি নিয়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
১৯ অক্টোবর সোহানের মা সুফিয়া বেগমের দায়েরকৃত ওই মামলাটিতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহকারী একান্ত সচিব সাইফুজ্জামান শিখর, যশোর-১ আসনের সংসদ সদস্য পরিচয়ে শেখ আফিল উদ্দিন ভূঁইয়াসহ ৫৭ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার বিবরণে দেখা যায়, ৪৮ নম্বর ক্রমিকে যশোর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য পরিচয়ে শেখ আফিল উদ্দিন ভূঁইয়া এবং ৪৯নং ক্রমিকে শেখ বশির উদ্দিন ভূঁইয়াকে আসামি করা হয়েছে। যেখানে উভয়ের বাবার নাম শেখ আকিজ উদ্দিন ভূঁইয়া বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিকে রোববার অন্তর্বর্তী সরকারের শিল্প উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত শেখ বশির উদ্দিনও যশোরের বিশিষ্ট শিল্পপতি শেখ আকিজ উদ্দিনের ছেলে। যে ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগ পরিবারের সদস্য এবং আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য আফিল উদ্দিনের ভাই বশির উদ্দিনকে বর্তমান সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেওয়ায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
অন্যদিকে শপথ গ্রহণের পর বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন হত্যা মামলায় তার নাম থাকার বিষয়ে কিছু জানা নেই বলে গণমাধ্যমে বক্তব্য দিয়েছেন।
এ বিষয়ে মাগুরার সোহান শাহ হত্যা মামলার বাদী মোছা. সুফিয়া বেগমের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, আমার একটি মাত্র ছেলে ছিল। তাকে খুন করা হয়েছে। কে মেরেছে আমার জানা নেই কিন্তু আমি বিচার চাই।
মামলায় উল্লেখিত আসামিদের পরিচয় সম্পর্কে জানতে চাইলে সুফিয়া বেগম বলেন, সন্তান হারিয়ে আমি পথে পড়ে গেছি। পাগল প্রায় অবস্থা। এমন সময়ে মোবাইল করে আমাকে ঢাকায় আদালতে যেতে বললে আমার স্বামী সেকেন্দার শাহের সঙ্গে গিয়েছিলাম। সেখানে যাওয়ার পর স্বাক্ষর করেছি; কিন্তু ওই মামলায় কারা আসামি, কাদের নাম লেখা আছে সেটি জানা নেই। তবে মামলা যারাই করুক, আমি স্বাক্ষর করেছি। সেখানে যাদের নামই থাকুক, আমি ন্যায়বিচার চাই।
উল্লেখ্য, ১৯ জুলাই ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয় মাগুরার শ্রীপুর উপজেলা সদরের সেকেন্দার শাহের ছেলে সোহান শাহ।