আবারও বন্ধ আরিচা-কাজিরহাট ফেরি চলাচল
যুগান্তর প্রতিবেদন, মানিকগঞ্জ
প্রকাশ: ১০ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৫৭ এএম
যমুনা নদীতে অব্যাহত নাব্য সংকটের কারণে আরিচা ও কাজিরহাট রুটের ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে।
শুক্রবার রাত ১১টার দিকে ফেরি চলাচল বন্ধ ঘোষণা করে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি)। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন মানিকগঞ্জের আরিচা ঘাট ও পাবনার কাজিরহাট প্রান্তে আটকা পড়া শতাধিক পণ্যবাহী যানবাহনের চালক ও সহকারীরা।
এর আগে, গত ২ নভেম্বর রাত ১০টার দিকে নাব্য সংকটের কারণে আরিচা-কাজিরহাট নৌপথে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকে। পরে সাড়ে ৩৭ ঘণ্টা পর পুনরায় ফেরি চলাচল শুরু হয়।
পরিবহণ শ্রমিকেরা জানান, প্রতিবছর এই সময়ে নদীতে নাব্য সংকট দেখা দেয়। আগে থেকে নদীতে নৌপথ খনন করা হলে নাব্যতা সংকট হতো না। এর আগে গত ১ নভেম্বর থেকে দুই দিন ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল। প্রায় এক সপ্তাহ ফেরি চলাচল সচল থাকার পর গতকাল শুক্রবার রাত থেকে আবারও ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফেরি চলাচল ব্যাহত হওয়ায় সময়মতো পণ্য গন্তব্যে পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না। এতে ব্যবসায়ীরা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। পাশাপাশি ঘাট এলাকায় আটকে থেকে তাঁদের খরচও বেড়ে যাচ্ছে।
বিআইডব্লিউটিসির আরিচা ঘাট কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, প্রায় একমাস ধরে আরিচা ঘাটের অদূরে যমুনার নদীতে ডুবোচরে ফেরি আটকে যাচ্ছে। এই অবস্থায় অর্ধেক পণ্য বোঝাই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ফেরি চলাচল চালু রাখা হয়। সাতটি খনন যন্ত্র দিয়ে দিয়ে নৌপথ খনন করেও নাব্যতা ঠিক রাখা যাচ্ছে না। এভাবে ফেরি চলাচল করতে থাকলে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে। দুর্ঘটনা এড়াতেই গতকাল শুক্রবার রাত ১১টা থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ফেরি বন্ধ থাকায় শনিবার দুপুর একটা পর্যন্ত আরিচা ঘাট এলাকায় বিভিন্ন পণ্যবাহী শতাধিক যানবাহন আটকে আছে। তবে ফেরি বন্ধ থাকায় অনেক যানবাহন ফিরে গিয়ে যমুনা সেতু হয়ে গন্তব্যে যাচ্ছে। একইভাবে কাজিরহাট এলাকায়ও শতাধিক পণ্যবাহী যানবাহন আটকা পড়েছে।
নারায়ণগঞ্জ থেকে সোয়াবিন তেল নিয়ে পাবনায় যাচ্ছিলেন ট্রাক চালক আবুল কাশেম। তিনি বলেন, গতকাল শুক্রবার রাত ১১টার দিকে আরিচা ঘাট এলাকায় আসেন তিনি। ফেরি বন্ধ থাকায় বিকল্প পথে গন্তব্যে যাওয়ার চিন্তা করছেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, এই নৌপথে পাবনায় যেতে খরচ ও সময় কম লাগে। এ কারণে সহজে যাতায়াত করা যায় বলে আমরা এই নৌপথ ব্যবহার করি। কিন্তু ফেরি চলাচল বন্ধ হওয়ায় বিপাকে পড়েছি।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহণ কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) জানিয়েছে, নৌ পথের নাব্য ফিরিয়ে আনতে অব্যাহতভাবে ড্রেজিং কাজ পরিচালনার জন্য তিন দিন ফেরি চলাচল বন্ধ রাখার অনুরোধ জানিয়েছে ফেরি কর্তৃপক্ষের কাছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহণ করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি)র আরিচা এরিয়া অফিসের ব্যবস্থাপক আবু আব্দুল্লাহ বলেন, নাব্য সংকটের কারণে যমুনা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে পানি আশঙ্কাজনকভাবে কমে যাওয়ায় ৫/৬টি যানবাহন নিয়েও ফেরি চলতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। দুর্ঘটনার ঝুঁকি এড়াতে সাময়িকভাবে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। নৌ পথের নাব্য সংকট দূর করতে বিআইডব্লিউটিএর ড্রেজিং ইউনিট তাদের সাতটি ড্রেজার দিয়ে নৌপথটিতে খনন কাজ চলছে। আগামী তিন দিনের মধ্যে নৌপথটি ফেরি চলাচলে উপযোগী হবে বলে জানান।