যুদ্ধাপরাধের মিথ্যা মামলায় বিএনপি-জামায়াত নেতাদের হত্যা করা হয়
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ১২:২৩ এএম
যুদ্ধাপরাধের মিথ্যা মামলায় বিএনপি-জামায়াত নেতাদের হত্যা করা হয় বলে মন্তব্য করে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ বলেছেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের সময় যে ঘটনা ঘটেছিল তার বিচার করেছিলেন। সেই বিচারে দেশের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল। বাংলাদেশের প্রখ্যাত আলেম দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে অন্যায়ভাবে হত্যা করছে এই শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও জিয়াউর রহমান সরকারের মন্ত্রী আব্দুল আলীমকেও যুদ্ধাপরাধীর মিথ্যা মামলা দিয়ে হত্যা করেছিল। আল্লাহর কী ফায়সালা দেখেন, শেখ হাসিনার তৈরি করা ট্রাইব্যুনালেই এখন তার ও তার সাঙ্গপাঙ্গদের বিচার হবে ইনশাআল্লাহ।
শুক্রবার বিকালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার শাহাজানপুর ইউনিয়নের নরেন্দ্রপুর দাখিল মাদ্রাসা মাঠ প্রাঙ্গণে নির্বাচন ও সংস্কারের রোড ম্যাপের দাবিতে এবং ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বরের জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত বিশাল জনসভায় হারুনুর রশীদ এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে নভেম্বর মাস একটি ঐতিহাসিক ও গুরুত্বপূর্ণ মাস। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তৎকালীন বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হয়েছিলেন এবং আওয়ামী লীগ নেতা খন্দকার মোশতাক আহমেদ অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশের রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেছিলেন। তারপর অভ্যুত্থান ও পাল্টা অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশের ক্ষমতা পালাবদলের চেষ্টা চলছিল। সেই সময় জিয়াউর রহমানকে বন্দি করা হয়েছিল। তার প্রেক্ষিতে ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সিপাহি-জনতা দেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে চক্রান্ত রুখে দিয়ে জিয়াউর রহমানকে মুক্ত করে।
হারুনুর রশীদ বলেন, এই দেশের সংবিধানে জিয়াউর রহমান বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম সংযোজন করেছিলেন। এজন্য জিয়াউর রহমানের ওপর শান্তি ও রহমত অর্পিত হয়েছিল। জিয়াউর রহমান রাত ৩টার সময়ও তার ক্যাবিনেটের মন্ত্রী-এমপিদের ফোন করে খোঁজখবর নিতেন এবং তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে সাহায্য কামনা করতেন। যার কারণে তিন থেকে চার বছরে এই দেশে শান্তি ফিরে এসেছিল।
তিনি আরও বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পর ক্ষমতায় এসে রক্ষীবাহিনী গঠন করে ৩০ হাজার যুবক ও মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করেছে। বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করে একদলীয় বাকশাল কায়েম করেছিল এবং সমস্ত পত্রপত্রিকার স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছিল। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছিল। তার কন্যা হাসিনাও বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। বাংলাদেশের মানুষের ভোটের অধিকারকে কেড়ে নিয়েছে।
তিনি বলেন, নবগঠিত গুম কমিশনের কাছে ১৬০০ ব্যক্তির গুমের অভিযোগ করেছে তাদের পরিবার। এই মানুষগুলো পতিত স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের আমলে গুম হয়েছে।
শাহাজানপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি মো. আব্দুল মালেক সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম, জেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান অনু, তাঁতী দলের জেলা সভাপতি আতাউর রহমান, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি সারোয়ার জাহান ও সাবেক সহ-সভাপতি মীম ফজলে আজিম, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ওমর ফারুক রানা, ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মুকুল হোসেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কুদ্দুস, শাহাজানপুর ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি নাসির হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আল মামুন, ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি নাজিম উদ্দীন, সাধারণ সম্পাদক মবিন ইসলামসহ আরও অনেকে।