Logo
Logo
×

সারাদেশ

শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত আনোয়ারার কৃষকরা

Icon

কর্ণফুলী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৩ পিএম

শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত আনোয়ারার কৃষকরা

চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন কৃষকরা। বাজারের চাহিদা বিবেচনায় রেখে একটু বেশি লাভের আশায় সবজিতে স্বপ্ন বুনছেন তারা। 

সরেজমিন উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে কৃষকরা লাল শাক, বরবটি, মুলা শাক, পালং শাক, লাউ, মিষ্টি কুমড়া, তিতা করলা, বেগুন, শিম, মুলা, ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো ও শসাসহ বিভিন্ন সবজির চাষাবাদ শুরু করেছেন।  

তিন থেকে চার সপ্তাহ পর এসব সবজি বাজারজাত করবেন এমনই আশা করছেন এখানকার কৃষকরা। তারা কাকডাকা ভোরে ঘুম থেকে উঠে জমিতে হালচাষ, চারা রোপণ, খেতে পানি ও খেতের আগাছা পরিষ্কার করাসহ নানা কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। শুধু নিজেদের চাহিদাই নয়, বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে এসব সবজি। শীতের এই মৌসুমে আনোয়ারা উপজেলার বিভিন্ন বাজারে বিভিন্ন জাতের সবজি পাঠাবেন কৃষক। ঠিক তেমনই প্রস্তুতি চলছে তাদের। 

হাইলধর ফকিরের চর কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যে কোনো ফসল আগাম চাষ হলে বাজারে চাহিদা বেশি থাকে। তাই মুনাফাও অনেক বেশি হয়। উঁচু জমিতে সবজি চাষে ঝুঁকছেন তারা। অল্প সময়ে কম খরচে অধিক মুনাফা লাভের জন্য মিষ্টি কুমড়া, লাউ, ফুলকপি ও বাঁধাকপির জুড়ি নেই। পানি জমে না এমন উঁচু জমি কপি চাষের জন্য উপযুক্ত। ফকিরের চরের কৃষকরা যুগ যুগ ধরে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে আগাম সবজি চাষে বেশ আলোড়ন তুলছেন চট্টগ্রামে। ক্ষেত থেকে সবজি নিয়ে কৃষকরা পাশের ফকিরহাটে গেলেই পাইকারি বিক্রেতারা তাদের কাছ থেকে নিয়ে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে নিয়ে যান। এখানে মিষ্টি কুমড়া ৩৫-৪০ টাকা, লাউ ২৫-৩০ টাকা ধরে পাইকারি বিক্রি করেন কৃষকরা। 

ইছাকালী গ্রামের কৃষক জামাল উদ্দিন (৫০) জানান, ছোটকাল থেকে বাবার সঙ্গে সবজি চাষ করি। প্রতি বছর ৩ থেকে ৪ কানি জমিতে সবজি চাষ করি। বছরে ৯ মাস এখানে সবজি চাষ করি। এসব সবজির মধ্যে মিষ্টি কুমড়া, লাউ ও টমেটো বছরে ৯ মাস উৎপাদন করি। খেত থেকে মাসে ৬ বার মিষ্টি কুমড়া তোলা হয়, প্রতিবার ৪ থেকে ৫ মণ পাওয়া যায়। 

তিনি বলেন, ১২ মাসি সবজিতে বেশি মুনাফা পাওয়া যায়। এখানকার সবজি কীটনাশকমুক্ত। উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতায় ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করা হয়। কীটনাশক ব্যবহার না করেই পোকামাকড় দমন করা হয়। তাই উৎপাদিত সবজি গুণগতমানে সেরা হওয়ায় চাহিদাও অনেক বেশি। 

শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত আরেক কৃষক সাইফুদ্দিন (৫৫) জানান, চলতি বছর ৫ কানি জমিতে সবজি চাষ করেছি। খিরা, ঢেঁড়স, বরবটি, বেগুন, আলু, মরিচ ও শিম লাগিয়েছি। এতে সব মিলে আমার ২ লাখ টাকার মতো ব্যয় হবে। আবহাওয়া ঠিক থাকলে ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করতে পারব। 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ রমজান আলী বলেন, উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকরা এখন ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করে কীটনাশকমুক্ত সবজি চাষ করছেন। এরই মধ্যে কিছু সবজি বাজারে উঠেছে এবং কৃষকরা ভালো দামও পাচ্ছেন। আনোয়ারায় গত বছর ১৩ হেক্টর জমিতে ২৩ হাজার ৭১৯ টন বিভিন্ন জাতের সবজি উৎপাদন হয়েছে। চলতি বছর তা বাড়িয়ে ২৫ হাজার টন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম