মিলছে না তাজা মাছ
নিষেধাজ্ঞাকালে ধরা বিবর্ণ ইলিশ বাজারে
বরিশাল ব্যুরো
প্রকাশ: ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৫৩ পিএম
ফাইল ছবি
ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা শেষ হলেও জেলেরা নদীতে কাঙ্খিত এই রুপালি মাছটি পাচ্ছেন না। যে কটা ধরা পড়ছে তার অধিকাংশ ডিমওয়ালা জাটকা। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পরও তাজা ইলিশের পরিবর্তে বরিশালের খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে বিবর্ণ বা বরফ দেওয়া ইলিশ।
ক্রেতাসহ প্রকৃত জেলেদের দাবি, এসব ইলিশ নিষিদ্ধ সময়ে শিকার করে এতদিন বিভিন্ন উপায়ে সংরক্ষণ করে এখন চড়া দামে বিক্রি করা হচ্ছে। এসব ইলিশের অধিকাংশ বিবর্ণ হয়ে যাওয়ায় প্রকৃত স্বাদ নেই। তাই ক্রেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। গত ৩ নভেম্বর মধ্যরাতে ইলিশ শিকারের ওপর নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়।
প্রকৃত জেলে ও ক্রেতারা বলেন, নিষেধাজ্ঞার সময় শিকার করার কারণে নদীতে ইলিশ কম। নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর নদীতে তেমন ইলিশ মিলছে না। যা ধরা পড়ছে তার অধিকাংশ জাটকা। নিষেধাজ্ঞা শেষের পর বাজারে তাজা ইলিশ আসার কথা। কিন্তু বর্তমান সময়ে বিক্রি হওয়া অধিকাংশ মাছ বহুদিন বরফ দিয়ে সংরক্ষণের কারণে বিবর্ণ হয়ে গেছে।
এসব মাছ নিষিদ্ধ সময়ে ধরে এখন বাজারে আনা হয়েছে বলে দাবি জেলেদের। বর্তমানে নদীতে ইলিশ না মিললেও মনকে মন ইলিশ নিয়ে আসা একাধিক জেলেকে ‘মাছ কবে ধরা?’এমন প্রশ্ন করলে তার উত্তর দিতে পারেননি তারা। তবে পাইকারি মৎস্য ব্যবসায়ীরা বলছেন, এসব মাছ সদ্য ধরে বাজারে আনা হয়েছে।
ক্রেতা আলামিন বলেন, ইলিশ কিনে এখন মনে হচ্ছে তা আগে ধরে মজুত করে রাখা হয়েছিল। দেখতে বিবর্ণ হয়ে গেছে। অনেক আগে ধরে বরফ দিয়ে মজুন করায় এমন হতে পারে বলে জানান তিনি।
জেলে আবদুল মজিদ বলেন, ৫-৬ ঘণ্টা আগে ধরা মাছ বিবর্ণ হওয়ার সুযোগ নেই। এসব ইলিশ নিষিদ্ধ সময়ে ধরে সংরক্ষণ করা হয়েছিল। এখন তা বাজারে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। এ কারণে প্রকৃত জেলেরা সংকটে রয়েছে বলে জানান তিনি।
বরিশাল জেলার মৎস্য কর্মকর্তা (ইলিশ) বিমল চন্দ্র দাস বলেন, বাজারে অসংখ্য ইলিশ থাকলেও তা আকারে ছোট। এসব মাছ নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার একদিন আগেও ধরা হতে পারে। কারণ জেলেরা সাধারণত নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার আগেই নদীতে নেমে যান বলে জানান তিনি।
বরিশাল বিভাগীয় মৎস্য কর্মকর্তা নৃপেন্দ্রনাথ বিশ্বাস বলেন, মাছ ব্যবসায়ীরা ব্যক্তিগত উদ্যোগেও ইলিশ সংরক্ষণ করে থাকে। তবে অভিযানে আমরা হিমাগারসহ মাছ বাজারে কোনো ইলিশ সংরক্ষণ অবস্থায় পাইনি। নিষেধাজ্ঞার ২২ দিনে তিন হাজার ৩৯৪টি অভিযান চালিয়ে ৬৮১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে। মামলা হয়েছে এক হাজার ১৫৭টি। অভিযানে ১৮ টনের বেশি ইলিশ জব্দ করা হয় বলে জানান তিনি।