মসজিদের সামনে প্রকাশ্যে বিএনপি নেতাকে গুলি করে হত্যা
বাগেরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৫ পিএম
বাগেরহাটের ডেমা ইউনিয়নের মীরজাপুর আমতলা মসজিদের সামনে প্রকাশ্য দিবালোকে মুখোশধারী সন্ত্রাসীরা গুলি ও জবাই করে সজীব তরফদার (৪৬) নামে এক বিএনপি নেতাকে হত্যা করেছে। পরে দুটি মোটরসাইকেলে আসা সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়।
নিহত সজীব তরফদার বাগেরহাট সদর উপজেলার ডেমা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক ও ৭নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য ছিলেন।
নিহত সজীব তরফদার ডেমা গ্রামের মৃত সিদ্দিক তরফদারের ছেলে। সজিবের স্ত্রী ও এক কন্যা সন্তান রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার সজীব তরফদার বাগেরহাট থেকে মোটরসাইকেলযোগে তার চাচা কামাল তরফদারকে সঙ্গে নিয়ে নিজ গ্রাম ডেমায় ফিরছিলেন। দুপুর ২টার দিকে পার্শ্ববর্তী গ্রাম মির্জাপুর আমতলা মসজিদের সামনে পৌঁছলে পূর্ব থেকে ওতপেতে থাকা দুটি মোটরসাইকেলে আসা মুখে কাপড় বাঁধা কয়েকজন সন্ত্রাসী মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে।
তারা প্রথমে খুব কাছ থেকে গুলি করে। পরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা নিশ্চিত করে পালিয়ে যায়। এ সময় গুলিতে মোটরসাইকেলে থাকা সজীবের চাচা কামাল তরফদার আহত হন। তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বাগেরহাট ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে পাঠিয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে কয়েকটি বুলেটের খোসা, একটি দাসহ কিছু আলামত জব্দ করেছে।
স্বজনদের অভিযোগ, স্থানীয় রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। এটি পরিকল্পিত হত্যা; এর পেছনে যারা রয়েছে তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তারা।
সজীবের বড় ভাই নাজমুল তরফদার বলেন, সজীব বাড়ি থেকে বাগেরহাটে যাচ্ছিল। সাথে চাচা ছিল। খবর শুনে ঘটনাস্থলে এসে দেখি আমার ভাইয়ের মাথায় ৪টি গুলি। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা তাকে হত্যা করেছে। আমরা এই হত্যাকারীদের বিচার চাই।
বাগেরহাট জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য সৈয়দ নাসির আহমেদ মালেক বলেন, সজীব একজন জনপ্রিয় নেতা ছিলেন। তিনি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করতে চেয়েছিলেন। সে কারণেও তার প্রতিপক্ষরা এই হত্যাকাণ্ড ঘটাতে পারে। এটা পরিকল্পিত হত্যা দাবি করে অপরাধী ও পরিকল্পনাকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানান এই নেতা।
বাগেরহাটের পুলিশ সুপার মো. তৌহিদুল আরিফ বলেন, ঘটনাস্থলে পাওয়া বুলেটের খোসা থেকে বোঝা যায় এটা শটগানের গুলি। ধারণা করছি শটগান দিয়ে গুলি করে তাকে হত্যা করা হয়েছে। হত্যা নিশ্চিত করতে একাধিক দল ছিল, হত্যাকারীরা মুখোশ পরা ছিল। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। হত্যাকারীদের শনাক্ত করতে পুলিশ কাজ শুরু করেছে। খুব দ্রুত হত্যাকারীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান তিনি।
এদিকে সাবেক এই বিএনপি নেতার হত্যাকারীদের বিচার দাবি ও শোকার্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন জেলা বিএনপির আহবায়ক এটিএম আকরাম হোসেন তালিম ও সাবেক সভাপতি এমএ সালাম।