ভাড়াটিয়ার হাতে বাড়ির মালিক খুন, স্বীকারোক্তির নোটপ্যাড উদ্ধার
যশোর ব্যুরো
প্রকাশ: ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:১৫ পিএম
যশোর শহরে নিজ বাড়িতে ভাড়াটিয়ার কাছে শাহানারা বেগম (৫৫) নামে এক বাড়ির মালিক হত্যার শিকার হয়েছেন। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শহরের শেখহাটি বাবলাতলা এলাকায় ভাড়াটিয়ার ঘর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে।
নিহত শাহানারা বেগম একই এলাকার আনিসুর রহমানের স্ত্রী। ঘটনার পর থেকে ভাড়াটিয়া বাবলা ও সুমন পলাতক রয়েছেন।
এ সময় ভাড়াটিয়ার ঘর থেকে একটি নোটপ্যাড উদ্ধার করে পুলিশ। সেখানে পূর্বশত্রুতার জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে- ভাড়াটিয়ারা স্বীকারোক্তি উল্লেখ করে গেছেন বলে দাবি পুলিশের।
নিহতের স্বামী আনিসুর রহমান জানান, তারা ছাড়া তাদের বাড়ির একটি ঘরে দুই যুবক ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করেন। বুধবার দুপুরে খাবার খেয়ে তিনি ইজিবাইক চালাতে বের হন। রাতে বাড়ি ফিরে তালা লাগানো দেখতে পান। আশপাশে খোঁজ করেও স্ত্রীর কোনো সন্ধান পাননি তিনি। পরে বৃহস্পতিবার সকালে আনিসুর দেয়াল টপকে বাড়ির ভেতরে গিয়ে সব ঘরে তালা দেখতে পান। ভাড়াটিয়ার ঘরের সামনে কাপড়ে রক্ত দেখে তিনি লোকজন ডেকে নিয়ে এসে তালা ভাঙেন। এরপর ঘরের ভিতরে শাহানারা বেগমের গলাকাটা মরদেহ পাওয়া যায়।
নিহতের ছোটভাই মাসুদ পারভেজ বলেন, ভাড়াটিয়া বাবলা ও সুমন মাদকাসক্ত হওয়ায় তাদের ঘর ছেড়ে দিতে বলা হয়েছিল। গত কয়েক মাস ধরে তাদের বাড়ি ছেড়ে দিতে বললে তারা ক্ষিপ্ত হয়। এমনকি শাহানারা ও ভাড়াটিয়াদের মধ্যে বাগবিতণ্ডাও হয়েছে। সেই জেরে এ হত্যার ঘটনা ঘটেছে। হত্যার পর তার শরীরে থাকা স্বর্ণালংকার নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
স্থানীয়রা জানান, বুধবার বিকালে প্রতিবেশীরা ওই দুই যুবককে বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে দেখেন। তাদের ধারণা, বাবলা ও সুমন হত্যার পর স্বর্ণালংকার লুট করে পালিয়ে গেছেন।
যশোর ডিবি পুলিশের পরিদর্শক শহিদুল ইসলাম হাওলাদার জানান, পরিচিত লোকের হাতেই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। তবে কী কারণে হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে তা বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে। হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়ার কক্ষে একটি নোটপ্যাড পাওয়া গেছে। তাতে তিন-চার পেজ ধরে হত্যার কারণ উল্লেখ করে গেছে। সেখানে পূর্বে তাদের বিরোধ, বাগবিতণ্ডা ও বিভিন্ন স্বর্ণালংকার নিয়ে যাওয়ার কথাও উল্লেখ করেছে। তবে আসলেই এ হত্যার কারণ কী, আসলেই এই নোটপ্যাড ভাড়াটিয়াদের কিনা সেটাও তদন্ত চলছে।
যশোর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, পরিচিত লোকের হাতেই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। তবে কী কারণে হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে তা বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে। একইসঙ্গে আসামিদের ধরতে অভিযান শুরু হয়েছে বলে জানান ওসি।