মাল্টিপারপাসের ৭ কোটি টাকা নিয়ে তিন পরিচালক উধাও
যুগান্তর প্রতিবেদন, সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ)
প্রকাশ: ২৯ অক্টোবর ২০২৪, ১০:১৬ পিএম
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের সেকেরহাট এলাকার আলো মাল্টিপারপাস লিমিটেড নামের একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ৭ কোটি টাকা নিয়ে তিন পরিচালক উধাও হয়েছেন।
গত এক মাস ধরে তাদের কোথাও সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। গ্রাহকরা মাল্টিপারপাসটিতে রাখা তাদের টাকা ফেরত পাওয়ার দাবিতে মঙ্গলবার সকালে মহজমপুর বাজারে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। এ সময় তারা তাদের টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- গ্রাহক মোস্তফা মিয়া, আমির হোসেন, শাহ আলম, জয়নাল আবেদীন, আছিয়া বেগম ও শান্তা আক্তার প্রমুখ।
জানা যায়, উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের সেকেরহাট এলাকায় সমবায় কার্যালয় থেকে রেজিষ্ট্রেশন নিয়ে ২০০৮ সালে আলো মাল্টিপারপাস লিমিটেড নামের একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়।
রেজিষ্ট্রেশন নেওয়ার পর থেকে পরিচালক ও স্থানীয় বাসিন্দা ফারুকুল ইসলাম শাহিন, এমরান হোসেন মুকুল ও কামাল হোসেন ঋণদান কার্যক্রম শুরু করেন। পাশাপাশি এ প্রতিষ্ঠানে প্রায় তিন শতাধিক গ্রাহক লভ্যাংশ পাওয়ার আশায় প্রায় ৭ কোটি টাকা আমানত হিসেবে জমা রাখেন।
অভিযোগ উঠেছে, গত এক মাস যাবত মাল্টিপারপাসটির তিনজন মালিক তাদের অফিস কার্যালয় বন্ধ করে দিয়ে আত্মগোপনে চলে যান। গ্রাহকরা তাদের টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে হয়রানির শিকার হয়।
গ্রাহক আমির হোসেন বলেন, আলো মাল্টিপারপাস লিমিটেডের তিন পরিচালক গ্রাহকদের প্রায় ৭ কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়ে যায়। এক পর্যায়ে স্থানীয় কয়েকজন মিলে তাদের সন্ধান বের করে বিচার সালিশের আয়োজন করে। সালিশে তাদের নামে গ্রাহকদের টাকায় কেনা বাড়ি ও জমি ৩ জন গ্রাহকের নামে নেওয়ার সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়।
একপর্যায়ে তিনজন গ্রাহক তাদের মারধর করে দ্বিতীয়তলা একটি বাড়ি ও তিনটি জমি জোরপূর্বক তাদের কাছ থেকে রেজিস্ট্রি করে নেয়। এ বিষয়টি গ্রাহকরা জানতে পেরে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। এ ঘটনার পর মাল্টিপারপাসটির তিন মালিক পুনরায় পালিয়ে যান।
আলো মাল্টিপারপাস লিমিটেডের পরিচালক ফারুকুল ইসলাম শাহিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, গ্রাহদের আমানতের টাকা বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করা হয়েছে। নগদ টাকা বর্তমানে হাতে না থাকায় আমাদের এ দুরবস্থা হয়েছে। তাছাড়া গ্রাহকের লভাংশের টাকা ফেরত দিতে গিয়ে আমাদের সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকদের টাকায় কেনা দ্বিতল ভবনের জমিসহ তিনটি জমি আমার কাছ থেকে জোরপূর্বক লিখে নিয়েছে। গ্রাহকরা আমাদের মারধর করার কারণে আত্মগোপনে রয়েছি। দ্রুত গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেওয়া হবে।
জামপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. কামরুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, গ্রাহকদের টাকার ফেরত পাওয়ার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হবে। স্থানীয় গণ্যমান্যদের নিয়ে গ্রাহকদের টাকা ফেরত পেতে সহযোগিতা করা হবে।