সুনামগঞ্জে মা-ছেলে খুন, তদন্তে ডিবি ও পিবিআই
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:২৪ পিএম
সুনামগঞ্জ শহরের হাসননগর নিজের বাসায় নৃশংসভাবে খুন হয়েছেন মা ও ছেলে। নিহতরা হলেন-ফরিদা বেগম (৫০) ও তার ছেলে মিনহাজুল ইসলাম (২০)। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টায় কাজের ভুয়া এসে ঘরের ভেতরে এই দুজনের রক্তাক্ত লাশ দেখে আশপাশের মানুষকে জানায়। পরে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় রহস্য উদঘাটন করতে ডিবি পুলিশ ও সিলেট থেকে পিবিআই এসে কাজ শুরু করেছে বলে জানান সদর থানার ওসি নাজমুল হক। একইসঙ্গে পুলিশও কাজ করছে। সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
প্রতিবেশী ও স্বজনরা জানান, চার বছর আগে ফরিদা বেগমের স্বামী জাহেদুল ইসলাম মারা যান। তার এক ছেলে ও এক মেয়ে। মেয়েকে যুক্তরাজ্য প্রবাসী ছেলের কাছে বিয়ে দেওয়ার পর সে ওখানেই থাকছেন। বাসায় থাকতেন ফরিদা বেগম ও তার কলেজ পড়ুয়া ছেলে মিনহাজুল ইসলাম। সম্প্রতি খালাতো বোন নার্গিস বেগম ও তার মাদ্রাসা পড়ুয়া ছেলে ফাহমিদও এই বাসাতেই থাকতো। তিন দিন আগে ঢাকা থেকে এই বাসায় আসে নার্গিস বেগমের ছেলে ফয়সল আহমদ (৩০)। ফয়সল মাদকাশক্ত ছিল বলে জানিয়েছেন স্বজন ও প্রতিবেশীরা।
ঘটনার পর ফয়সল ও ফাহমিদ এই দুইজনকে পাওয়া যাচ্ছে না। ফয়সলকে ফোনেও পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন স্বজনরা। তাদের মা নার্গিস বেগমকে অসুস্থ্য অর্থাৎ অজ্ঞান অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ফরিদা বেগমের বোন একই মহল্লার বাসিন্দা ছুফিয়া আক্তার বলেন, রাত ১০টার পরেও বোন ফরিদা বেগমের সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে তার। তিনি ফোনের চার্জারের জন্য কল দিয়েছিলেন। ওই সময় বাসায় মিনহাজুলও ছিল। সকালে আত্মীয়-স্বজনরা দুর্ঘটনার খবর জানান। তিনি দেখতে এসে এই অবস্থা দেখেন। নার্গিস বেগমের ছেলে দুজনকেই পাওয়া যাচ্ছে না। নার্গিস বেগম এখন কিছুই বলতে পারছেন না।
নিহত ফরিদা বেগমের চাচাত ভাই সাজন মিয়া বলেন, সকালে খবর পেয়েই আমরা এখানে এসেছি। মা-ছেলের সঙ্গে একই বাসায় আরও একটি পরিবার থাকতো। ওই পরিবারে দুই ছেলে ছিল। ঘটনার পর থেকে তাদের কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
সদর থানার ওসি নাজমুল হক জানান, সকালে খবর পেয়েই তারাও বাসায় এসেছেন। বাসায় ফয়সল ও ফাহমিদ নামের নিহতদের দুইজন আত্মীয় ছিল। তাদেরকে পাওয়া যাচ্ছে না। ফয়সল মাদকাশক্ত ছিল। তিনি বলেন, আমরা নিভিরভাবে ঘটনা তদন্ত করছি। পিবিআই’এর একটি দলও আসছে। তারাও তদন্ত করবেন।
পুলিশ সুপার আ.ফ.ম মো. আনোয়ার হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে যুগান্তরকে বলেন, পূর্ব শত্রুতার জেরে পরিকল্পিতভাবে এমন নৃশংস ঘটনা সংঘটিত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উদঘাটনে ডিবি ও পিবিআই'র টিম কাজ করছে। আশা করছি দ্রুতই ঘটনার রহস্য উদঘাটিত হবে। এদিকে এমন নৃশংস ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন নিহতের স্বজনরা।