ইউএনও জানেনই না আজ বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের শাহাদাৎ বার্ষিকী!
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৮ অক্টোবর ২০২৪, ১১:৪২ পিএম
আজ ২৮ অক্টোবর, বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী হামিদুর রহমানের ৫৩তম শাহাদাৎ বার্ষিকী। তবে এ উপলক্ষ্যে স্থানীয় প্রশাসন কোনো কর্মসূচিই গ্রহণ করেনি। ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলা নিবার্হী অফিসার (ইউএনও) ইয়াসমিন মনিরা রাত পোনে ৯টার দিকে যুগান্তরকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
একই সঙ্গে ইউএনও স্বীকার করেন যে, বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী হামিদুর রহমানের শাহাদাৎ বার্ষিকী যে ২৮ অক্টোবর, সেটা তিনি জানতেন না।
ইউএনও ইয়াসমিন মনিরার ভাষায়, ‘সারা দিন নানা ব্যস্ততায় ছিলাম। কেউই আমাকে দিনটির কথা বলেননি বা মনে করিয়ে দেননি’।
এদিকে দিনটি উপলক্ষে মহেশপুর উপজেলার খোর্দ্দ খালিশপুর (হামিদ নগরে) গ্রামে স্থাপিত সরকারি বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান ডিগ্রী কলেজ কর্তৃপক্ষ সাদামাটাভাবে স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কলেজটির অধ্যক্ষ আব্দুল হান্নান। আরও উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক রফি উদ্দীনসহ শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা।
বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী হামিদুর রহমান ১৯৪৫ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগোনা জেলার চাপড়া থানার ডুমুরিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর হামিদুর রহমানের পরিবারের সদস্যরা এ দেশে চলে আসেন। তৎকালীন ঝিনাইদহ মহাকুমার সীমান্তবর্তী মহেশপুর থানার খোর্দ্দ খালিশপুর গ্রামে আশ্রয় নেন তারা।
তখন হামিদুর রহমান বেশ ছোট। অভাবের সংসার। কাজ করতেন অন্যের বাড়িতে। ১৯৭১ সালে টগবগে যুবক হামিদুর। বিশাল দেহ। প্রচন্ড শক্তি তার। ১৯৭১ সালে ২ ফেব্রুয়ারি ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে যোগ দেন হামিদুর। সংক্ষিপ্ত প্রশিক্ষণ চলমান। দেশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। স্বাধীনতাকামী বাঙালী জাতি যুদ্ধে নেমে পড়েছেন। হামিদুর রহমানও ছুটে গেলেন যুদ্ধে। মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলের দক্ষিণ পূর্বে কমলগঞ্জ উপজেলার ধলই নামক স্থানে পাকবাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে ২৮ অক্টোবর রাতে (ধলইয়ের যুদ্ধে) শহিদ হন তিনি। ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আমবাসা গ্রামের একটি নিরিবিরি স্থানে সমাহিত করা হয় তাকে।
৩৬ বছর পর সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ২০০৭ সালের ১১ ডিসেম্বর হামিদুরের দেহাবশেষ বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয়। সমাহিত করা হয় ঢাকার শহিদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে। ২০০৮ সালের ৯ মার্চ শহিদ সিপাহী হামিদুর রহমান গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর উদ্বোধন করেন মুক্তিযুদ্ধের ৪নং সেক্টর কমান্ডার বীরউত্তম (অব) মেজর জেনারেল সি আর দত্ত।
তার নামে গ্রামের নামকরণ করা হয় হামিদনগর। গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘরের সামনেই স্থাপন করা হয় বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুরের জীবনী সম্বলিত একটি বিশাল আকৃতির ফলক।