ঘুমের মধ্যে নেওয়া হয়েছে টিপসই, পুত্রের বিচার চাইলেন পিতা
চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ: ২৮ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৩৮ পিএম
ছয় ভাইবোনকে বঞ্চিত করে সব সম্পত্তি হেবা দলিলের মাধ্যমে পিতার কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন আবু মো. মোছা নামে এক ব্যক্তি। পিতা স্বাক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন হলেও দলিলে দেওয়া হয়েছে পিতার টিপসই। ঘুমের মধ্যেই পিতার হাতের আঙুলের ছাপ বা টিপসই নেওয়া হয়েছে।
আর এমন অভিযোগে পুত্রের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন শতবর্ষী পিতা। হাতিয়ে নেওয়া সম্পত্তির পরিমাণ ভিটাবাড়িসহ ৩ একর জমি। এছাড়া নগদ ১৪ লাখ টাকাও কৌশলে পিতার কাছ থেকে নিয়েছেন ‘লোভী’ এই পুত্র। তার সঙ্গে হাতিয়ে নেওয়ার চক্রে ছিলেন স্থানীয় ইউপি সদস্য হারুন।
চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলায় ভয়াবহ এ জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে।
সোমবার চট্টগ্রামে একটি রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলন করে পুত্রের এমন প্রতারণা ও জালিয়াতির বিবরণ দিয়েছেন বদিয়র রহমান। চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার এলাকায় তার বাড়ি। তিনি সরকারের কাছে প্রতারক পুত্র ও এই জালিয়াতির সঙ্গে জড়িতদের বিচারও চেয়েছেন।
এ সময় বদিয়র রহমানের সঙ্গে তার ছেলে হারুন অর রশীদ, হাফিজুল ইসলাম, মেয়ে সাজেদা বেগম, সামশুন নাহার ও মমতাজ বেগম উপস্থিত ছিলেন।
বদিয়র রহমান বলেন, তার ৪ পুত্র ও ৩ কন্যা সন্তান রয়েছে। তার দ্বিতীয় পুত্র আবু মো. মুছা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে বেশ প্রভাবশালী ছিল। স্থানীয় ইউপি সদস্য হারুনকে সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন সময় তাকে হত্যার ভয় দেখাত। সম্পত্তি লিখে দেওয়ার জন্য চাপ দিত। নিজের অন্য ছেলেমেয়েদের বঞ্চিত করে কোনোভাবেই সব সম্পত্তি তাকে দেওয়ার জন্য রাজি হচ্ছিলেন না। এ অবস্থায় গত বছরের ২৬ এপ্রিল থেকে ২৭ নভেম্বর তিনটি হেবা দলিলের সন্ধান পান তিনি।
এসব দলিলে দেখা যায়, তার ভিটাবাড়ি ও ধানি জমিসহ ৩ একর সম্পত্তি রেজিস্ট্রি হয়ে গেছে তার পুত্র মুছার নামে। এতে তিনি বিস্মিত হন। তিনি লেখাপড়া জানা ও স্বাক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন মানুষ হলেও দেখা যাচ্ছে তিনটি দলিলে টিপসই দেওয়া আছে। অথচ তিনি কখনো কোনো কাগজে টিপসই দেন না। স্বাক্ষর করে থাকেন। তার ধারণা- তিনি অসুস্থ থাকা অবস্থায় ঘুমের মধ্যে তার হাতের আঙুলের ছাপ বা টিপসই নেওয়া হয়েছে কথিত দলিলগুলোতে।
এছাড়া গ্রামে তার জায়গা বিক্রির নগদ ১৪ লাখ টাকাও সুকৌশলে মুছা ও হারুন তার কাছ থেকে নিয়ে নেয় বলে অভিযোগ করেন বদিয়র রহমান। তিনি আরও বলেন, ৪ পুত্র ও তিন কন্যা সন্তানের সম্পদ হিসেবে মৃত্যুর আগে ইসলামি শরীয়ত মোতাবেক ৪ পুত্র ও তিন কন্যাকে বণ্টন করে দিতে ২য় পুত্রের আত্মসাৎকৃত সেই সম্পদ ফেরত পেতে চান। এজন্য তিনি বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।