বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গুলিতে যুবদল নেতা আবু রায়হান রাহিম (২৯) হত্যা মামলার প্রধান আসামি সাবেক পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বেলাল হোসেন প্রামাণিক ধরা পড়েছেন।
র্যাব-১২ বগুড়া কোম্পানির সদস্যরা সোমবার ভোরে তাকে জয়পুরহাটের আক্কেলপুর থেকে গ্রেফতার করেছেন।
বিকালে দুপচাঁচিয়া থানার ওসি ফরিদুল ইসলাম জানান, আসামিকে আদালতের মাধ্যমে বগুড়া জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে আবু রায়হান রাহিম হত্যাকাণ্ডের পর দুপচাঁচিয়া থানার সাবেক ওসি সনাতন চন্দ্র সরকার বলেন, থানায় হামলা চালিয়ে পুলিশের কাছে অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার সময় তিনি গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। এছাড়া মুনিরুল ইসলাম মুনির (২২) নামে গুলিবিদ্ধ একজন ঘটনাস্থলেই মারা যান।
মামলার বাদী নিহতের মা রওশন আরা বেগম সাক্ষাৎকারে বলেন, তিনি নিরক্ষর; রাত ২টার দিকে লোকজন তার বাড়িতে এসে কাগজে স্বাক্ষর নিয়েছেন। তিনি আসামিদের কাউকে চেনেন না।
তিনি আরও বলেন, ‘নিরপরাধ মানুষ আসামি হওয়ায় আমি চাই এ মামলা খারিজ হোক’।
পুলিশ ও এজাহার সূত্র জানায়, নিহত যুবদল নেতা ও গৃহনির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্য আবু রায়হান রাহিম দুপচাঁচিয়ার চকসুখানগাড়ি গ্রামের মৃত শাহজাহান আলীর ছেলে। গত ৪ আগস্ট সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন মিছিল বের করে। মিছিল আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে সামনে এলে হামলা করা হয়। এ সময় রাহিম গুলিবিদ্ধ হন। তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে ওই রাতেই তাকে ঢাকার জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ৯ আগস্ট সকাল সাড়ে ৮টার দিকে তিনি মারা যান।
ঘটনার ১৩ দিন পর ১৭ আগস্ট রাতে নিহতের মা রওশন আরা বেগম দুপচাঁচিয়া থানায় মামলা করেন। দুপচাঁচিয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বেলাল হোসেন প্রামাণিককে প্রধান আসামি করে ২২ জনের নাম উল্লেখ করে ৮২ জনকে আসামি করা হয়।
দুপচাঁচিয়া থানার ওসি ফরিদুল ইসলাম র্যাব-১২ বগুড়া কোম্পানির একটি দল সোমবার ভোরে জয়পুরহাটের আক্কেলপুর থেকে রাহিম হত্যা মামলার প্রধান আসামি বেলাল হোসেনকে গ্রেফতার করেছেন। থানায় সোপর্দ করা হলে পরে তাকে আদালতের মাধ্যমে বগুড়া জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।