‘বালু-পাথরখেকোদের কঠোর হাতে দমন করতে হবে’
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:১৫ পিএম
সুনামগঞ্জ জেলার বিভিন্ন নদীতে অবৈধভাবে বালু ও পাথর উত্তোলন বন্ধে অংশীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার দুপুরে জেলা শিল্পকলা একাডেমির হাছনরাজা মিলনায়তনে জেলা প্রশাসন এ সভার আয়োজন করে।
এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার আবু আহমদ ছিদ্দীকী। তিনি বলেন, বালু-পাথরখেকোদের কঠোর হাতে দমন করতে হবে।
সভায় জাদুকাটা, ধোপাজান চলতি নদীসহ জেলার বিভিন্ন পাহাড়ি নদীতে বালু-পাথর লুট, পাড় কেটে পরিবেশের বিপর্যয় রোধে মতামত তুলে ধরেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, পরিবেশবাদী আন্দোলন, সাংবাদিক, রাজনৈতিক ও বারকি শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
অংশীজনের বক্তব্য শোনার পর বিভাগীয় কমিশনার বলেন, বালু-পাথারখেকোরা হচ্ছে বীভৎস, ভয়ংকর, হিংস্র- এদের কঠোরভাবে দমন করতে হবে।
তিনি বলেন, বালু-পাথর হচ্ছে আমাদের জাতীয় সম্পদ। এগুলো যারা লুণ্ঠন করে তারা শক্তিশালী এবং ভয়ংকর ফেরোসাস। তাদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়তে হবে। ভূমিখোকো, বালু-পাথরখেকো, পাহাড়খোকোদের বিরুদ্ধে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে লড়তে না পারলে তাদের দমন করা যাবে না। এরা এক জায়গা ইজারা নিয়ে আশপাশের সব জায়গা থেকে বালু-পাথর অবৈধভাবে উত্তোলন করে।
তিনি বলেন, বালু-পাথর মহালে প্রশাসন, পুলিশ, বিজিবি ২৪ ঘণ্টা থাকতে পারে না। যে কারণে লুণ্ঠন রোধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়ার সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন- পুলিশ সুপার আ ন ম আনোয়ার হোসেন, বিজিবির ২৮ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল একেএম জাকারিয়া কাদির, জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শেরেনূর আলী, সুনামগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সভাপতি অধ্যক্ষ শেরগুল আহমেদ, সাংবাদিক লতিফুর রহমান রাজু, পংকজ কান্তি দে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক আবু সালেহ মোহাম্মদ নাসিম, আব্দুল্লাহ আল গালিব, স্থানীয় সংগঠক এনডি উসমান গণী, জিহান জুবায়ের, বেলার প্রতিনিধি শাহ শাহেদা আক্তার, সুনামগঞ্জ পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের সভাপতি আবু নাছের, সহ-সভাপতি শওকত হোসেন, বারকি শ্রমিক সভাপতি নাছির মিয়া, ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের সভাপতি ছদরুল আলম সাইফুল, জামায়াত নেতা সিরাজুল হক ওলী, শ্রমিক নেতা মো. আব্দুর রশিদ, শাহেদ মিয়া, শিক্ষক মো. হাবিবুর রহমান প্রমুখ।
সভায় উপস্থিত ছিলেন ৬১ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সেকেন্ড ইন কমান্ড মেজর মহিউদ্দিন ফারুকী। সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সাব্বির আহমদ আখঞ্জী।
মতবিনিময় সভায় সুনামগঞ্জের বারকি শ্রমিক নেতা, নৌ-শ্রমিক, পরিবেশ আন্দোলনের নেতা ও প্রশাসনিক নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় বক্তারা সুনামগঞ্জের চলতি নদী জাদুকাটা ও ধোপাজান বালি-পাথর মহাল ইজারা না দিয়ে নদীপাড়ের শ্রমজীবী মানুষদের ম্যানুয়ালি আহরণের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য বিভাগীয় কমিশনারের প্রতি আহবান জানানো হয়। বিভাগীয় কমিশনার বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা হবে বলে আশ্বাস প্রদান করেন।