প্রতিবেশীর জমি দখল নিলেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা
যশোর ব্যুরো
প্রকাশ: ২৭ অক্টোবর ২০২৪, ১১:১২ পিএম
যশোর সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মফিজুর রহমান ডাবলুর বিরুদ্ধে প্রতিবেশীর জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে। রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হলেও স্বেচ্ছাসেবক লীগের এই নেতার হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন প্রতিবেশী একেএম মোরশেদ।
রোববার দুপুরে প্রেস ক্লাব যশোরে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব অভিযোগ করেন।
লিখিত বক্তব্যে একেএম মোরশেদ বলেন, সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মফিজুর রহমান ডাবলু তার ও পৌরসভার জমি দখল করে মার্কেট নির্মাণ, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে জড়িত।
অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, আওয়ামী লীগের শাসনামলে সদর উপজেলার স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি হন মফিজুর রহমান ডাবলু। এরপর তিনি একদল সন্ত্রাসীকে সঙ্গে নিয়ে ভূমিদস্যুতা শুরু করেন। এক সময় তার নজর পরে শহরের ওয়াপদা গ্যারেজ মোড়ে আমার জমি ওপর। আমাকে ও আমার পরিবারে সদস্যকে অস্ত্র নিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে জমি দখলের চেষ্টা করেন। পরিবারে নিরাপত্তার স্বার্থে শহরের জমি ঘর ফেলে রেখে স্ত্রী, সন্তান ও বৃদ্ধ মাকে নিয়ে উপজেলার হামিদপুর গ্রামে বসবাস করছি।
তিনি আরও বলেন, আমার বাড়ির প্রাচীর ভেঙে জায়গা দখল করে নেন ডাবলু। আদালতের মাধ্যমে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। তারপরও দলীয় ক্ষমতা ব্যবহার করে সে জায়গায় এখন তিনি (মফিজুর রহমান ডাবলু) ইট-বালু দিয়ে কংক্রিটের ঢালাই করে দখল নিয়েছেন। এরপর তিনি পৌরসভার জায়গা দখল করে অবৈধভাবে পৌরসভার অনুমোদনবিহীন মার্কেটও নির্মাণ করেন।
এদিকে পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, ওয়াপদা গ্যারেজ মোড়ে পৌরসভার জায়গা দখল করে ৯টা দোকানঘর নির্মাণ করেছেন ডাবলু। অবৈধ এই স্থাপনা উচ্ছেদের বিষয়ে ২৪ ঘণ্টার নোটিশ প্রদান করা হয়। কার্যত ২৪ ঘণ্টার নোটিশ এক মাস অতিবাহিত হলেও তিনি সেটি অমান্য করে বহাল তবিয়তে রয়েছেন।
পৌরসভার জায়গা দখল করে গড়ে তোলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের বিষয় মোট চারবার নোটিশ প্রদান করেছে পৌর কর্তৃপক্ষ। কিন্তু মফিজুর রহমান নোটিশের সন্তোষজনক জবাব না দিয়ে কলাম নির্মাণ ও পুরাতন ভবনের সঙ্গে সংযুক্ত করে এবং রাস্তার দিকে আরও বর্ধিত করে ছাদ ঢালাই কাজ সম্পন্ন করে।
স্থানীয় সরকার যশোরের উপ-পরিচালক রফিকুল হাসান যশোর পৌরসভার প্রশাসকের দায়িত্ব লাভের পর গেল ১ সেপ্টেম্বর তিনি মফিজুর রহমান ডাবলুর অবৈধ স্থাপনার বিষয় নিয়ে পুনরায় নোটিশ প্রদান করেন। তবে নোটিশপ্রাপ্তির এক মাস অতিবাহিত হলেও মফিজুর রহমান ডাবলু তার অবৈধ স্থাপনা অপসারণ করেননি। বরং মফিজুর রহমান ডাবলু নোটিশের বিরুদ্ধে আইনি নোটিশ পাঠান।
যশোর পৌরসভার প্রকৌশলী শরীফ হাসান বলেন, মফিজুর রহমান ডাবলু নোটিশের বিরুদ্ধে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছে। আমরা আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতের নোটিশের সন্তোষজনক জবাব দিয়েছি। এখন আদালতের নির্দেশনার অপেক্ষায় আছি।
এ প্রসঙ্গে যশোর সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মফিজুর রহমান ডাবলু বলেন, আমি কোনো ভূমিদস্যু নই। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে। আমি কারো জমি দখল করিনি। একেএম মোরশেদ আমার প্রতিবেশী। তার জমির মধ্যে আমার জমি ছিল। আমার জমি আমি দখল করেছি।
তিনি আরও বলেন, কাগজপত্রে পৌরসভার কোনো জমি নেই। আমি আমার জমিতে মার্কেট নির্মাণ করেছি।