মসজিদ দখল নিয়ে তাবলিগ জামাতের দু’গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ৩০
নাটোর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:১১ পিএম
সা’দপন্থিরা মসজিদে অবস্থান নিলে বিএনপি নেতা ফয়সাল আলম আবুল বেপারীর অনুসারীদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। ছবি: যুগান্তর
নাটোরে মারকাজ মসজিদ দখল নেওয়াকে কেন্দ্র করে তাবলিগ জামাতের দু’গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার শহরতলীর তেবাড়িয়া মারকাজ মসজিদ প্রাঙ্গণে দুই ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষে আহত হয়েছেন উভয় পক্ষের ৩০জন।
আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থার অবনতি হওয়ায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক ঘণ্টাখানেক যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে রোববার দু’পক্ষকে নিয়ে বসে সুষ্ঠু সমাধানের আশ্বাস দিলে উভয় পক্ষ ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। তবে রোববার পর্যন্ত মসজিদ এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সক্রিয় অবস্থানে থাকবেন বলে জানানো হয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, এই মারকাজ মসজিদটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে তাবলিগ জামাতের সাথীরা মিলে মিশে অবস্থান করতেন। ২০১৭ সালে তাবলিগের সা’দ ও জুবায়েরপন্থিদের মধ্যে কেন্দ্রীয়ভাবে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হলে এর জেরে সারাদেশের মতো নাটোরেও তারা দুইভাবে বিভক্ত হন। এরপর থেকে তৎকালীন এমপি শফিকুল ইসলাম শিমুলের সিদ্ধান্তে সা’দপন্থিরা তেবাড়িয়া মারকাজ মসজিদে অবস্থান নেন। অপরদিকে জুবায়েরপন্থিরা শহরের আলাইপুর মারকাজ মসজিদে অবস্থান করতেন।
সা’দপন্থি তাবলিগের সদস্য কাওছার হোসেন জানান, ৫ আগষ্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরে যোবায়েরপন্থিরা সরব হয়। ৭ আগস্ট দুপুরে যোবায়েরপন্থিরা দলবল নিয়ে তেবাড়িয়া মারকাজ মসজিদে এসে সা’দপন্থিদের বের করে দেয়। বৃহস্পতিবার ইজতেমা সংক্রান্ত পরামর্শ করতে সা’দপন্থিরা মসজিদে আসলে জুবায়েরপন্থিরা তাদের ওপর হামলা চালায়।
অপরদিকে জুবায়েরপন্থি তাবলিগের সদস্য সেলিম জানান, গত ৭ আগস্ট তাদের সঙ্গে বসে স্থানীয়দের মিমাংসায় সা’দপন্থি আর এ মসজিদে আসবে না বলে সিদ্ধান্ত হয়। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে পুরো জেলার কয়েকশত সা’দপন্থি হঠাৎ এসে মসজিদে থাকা জুবায়েরপন্থিদের বের করে দেয়। এ ঘটনা জানার পরে জুবায়েরপন্থি তাবলিগকর্মী ও সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আলম আবুল বেপারীর অনুসারীরা এসে তাদের বের হয়ে যেতে বলে। এতে উভয়পক্ষের সংঘর্ষে ৩০ জন আহত হয়।
নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহাবুব রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বেলা ১২টার দিকে দু’পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর সদস্য ও পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
নাটোর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আরিফ হোসেন জানান, দ্বন্দ্ব নিরসন করতে আগামী রোববার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে দু’পক্ষকে নিয়ে বসা হবে। সে পর্যন্ত মসজিদ এলাকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রনে থাকবে।