চট্টগ্রামে হাতির আক্রমণে দেড় মাসে পাঁচজনের মৃত্যু
চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ: ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ১১:৫০ পিএম
চট্টগ্রামের আনোয়ারা ও কর্ণফুলী উপজেলায় গত দেড় মাসে হাতির আক্রমণে স্থানীয় পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দুটি উপজেলার পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীরা আতঙ্কে রয়েছেন।
সবশেষ বুধবার ভোর ৪টার দিকে কর্ণফুলী উপজেলার বড় উঠান ইউনিয়নের দক্ষিণ শাহমীরপুর এলাকায় হাতির পায়ে পিষ্ট হয়ে আকবর (৪২) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। এর প্রতিবাদে বুধবার দুপুরে মানববন্ধন করে হাতির আক্রমণ ঠেকানোর দাবি জানান স্থানীয়রা।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্র জানায়, বুধবার ভোর ৪টার দিকে স্থানীয় একটি মুদি দোকানে হামলা করে হাতির দল। সেখানে চাল খেয়ে ফেলে। খবর পেয়ে দোকান মালিক আকবর বাড়ি থেকে বের হয়ে দোকানের দিকে রওনা হন। এ সময় হাতির দলের সামনে পড়লে আকবরকে পায়ে পিষ্ট করে এবং পরে দাঁত দিয়ে খুঁচিয়ে মারে হাতিরা। ওই দলে চারটি হাতি ছিল বলে বড় উঠান ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য নাছির মিয়া জানিয়েছেন। এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যু মামলা করেছে পুলিশ।
সোমবার রাতে আনোয়ারা উপজেলার বটতলী গ্রামের গুচ্ছগুগ্রাম প্রকল্প এলাকায় হাতির আক্রমণে হালিমা খাতুন (৬৫) নামে এক বৃদ্ধার মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। আক্রমণে বৃদ্ধার শরীর টুকরো টুকরো হয়ে যায়। পরদিন সকালে ছিন্ন বিচ্ছিন্ন শরীর উদ্ধার করে স্থানীয়রা। নিহত হালিমা খাতুন রায়পুর ইউনিয়নের চুন্নাপাড়া গ্রামের মৃত ছৈয়দ নূরের স্ত্রী।
১১ সেপ্টেম্বর রাতে কর্ণফুলী উপজেলার বড় উঠান ইউনিয়নের দৌলতপুরে হাতির আক্রমণে মোহাম্মদ সৈয়দ ওরফে লুতু মিয়া (৫৫) নামের এক কৃষক নিহত হন।
২৩ সেপ্টেম্বর রাতে আনোয়ারা উপজেলার বৈরাগ ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের আশ্রয়ন প্রকল্প এলাকায় কাশেম ওরফে দুলাল (৬০) এবং ৮ নম্বর ওয়ার্ডের খোশাল তালুকদার বাড়ি এলাকায় রেহানা বেগম (৩৮) হাতির আক্রমণে মারা যান।
সূত্র জানায়, চট্টগ্রামের দেয়াং পাহাড়, হ্রদ ও বন ঘেরা জায়গায় গত ছয় বছর ধরে বিচরণ করছে হাতির দলটি। তাদের হামলায় ফসলের যেমন ক্ষতি হচ্ছে, তেমনি মানুষের প্রাণ হারাচ্ছে। কর্ণফুলী ও আনোয়ারা উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নজুড়ে তাদের বিচরণ। ওই এলাকার জনপ্রতিনিধিরা হাতিগুলো সরিয়ে নিতে বহুবার বন বিভাগকে চিঠি দিয়েছে।
তবে বন বিভাগ ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিজেদের করিডোরে (চলাচলের পথ) কোনো বাধা হাতি সহ্য করতে পারে না। পূর্ব পুরুষের আবাসস্থল হওয়ায় ওই হাতির দলটি এ এলাকা ছেড়ে যাচ্ছে না। এ অবস্থায় নিহত, আহত এবং ক্ষতিগ্রস্তদের নিয়মিত ক্ষতিপূরণ দিয়ে যাচ্ছে বনবিভাগ।