টাকা ছাড়া গরু না দেওয়ায় বেধড়ক মারেন ওসি
জয়দেব রানা, আলীকদম (বান্দরবান)
প্রকাশ: ২২ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৪২ পিএম
টাকা ছাড়া গরু না দেওয়ায় থানায় ধরে নিয়ে সারারাত মারধরের অভিযোগ করেন জালাল উদ্দিন নামের এক যুবক। বান্দরবানের আলীকদম থানা ওসির বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেন তিনি।
এএসআই জামান মিয়া ও রাশেদুল তাকে ঘটনার দিন রাতে আলীকদম উপজেলার নয়াপাড়া এলাকা থেকে ধরে থানায় নিয়ে যায়। নির্যাতনের একদিন পরে সকালে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দিয়ে থানা থেকে ছাড়া পান বলে বর্ণনা দিয়ে আইজিপি ও পুলিশ সুপার বরাবর অভিযোগ করেছেন নির্যাতিত যুবক জালাল উদ্দিন।
অভিযোগে বলা হয়, আলীকদম উপজেলার নয়াপাড়া ইউনিয়নের মোক্তার সর্দারপাড়ার বাসিন্দা মো. ইউনুছের ছেলে জালাল উদ্দিন গত ১৯ মার্চ আনুমানিক রাত ৮টার দিকে নয়াপাড়া আজিজের দোকানে বসে নাস্তা করছিলেন। এ সময় সেখানে উপস্থিত হন আলীকদম থানার এএসএস জামান মিয়া ও রাশেদুল ইসলাম। তারা জালাল উদ্দিনকে থানায় যেতে হবে বলে জোরপূর্বক হাতকড়া পরিয়ে থানায় নিয়ে যান।
জালাল উদ্দিন অভিযোগে আরও বলেন, দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পর ওসির কক্ষে নেওয়া হয় তাকে। তখন ওসি খন্দকার তবিদুর রহমান বলেন- একটি গরু দিতে বলছি, দেওয়া হয়নি কেন? আমি গরুর ব্যবসা করি না, কোত্থেকে দিব- এ কথা জানালে ওসি রেগে গিয়ে মেঝেতে শুইয়ে দিতে নির্দেশ দেন। এএসআই জামান জালাল উদ্দিনকে ওসির কক্ষের মেঝেতে জোর করে শুইয়ে চেপে ধরেন। এরপর ওসি স্বয়ং জালালের পায়ের ওপর পা দিয়ে চেপে ধরে প্লাস্টিকের পাইপ দিয়ে পেটান। আওয়াজ করলে আরও বেশি মারধর করেন।
জালাল উদ্দিন বলেন, থেমে থেমে ২ ঘণ্টার অধিক সময় মারধর করেন ওসি। পরে ওসি তার কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। না হলে মাদক মামলা দেওয়ার হুমকি দেন। এ সময় ওসির টেবিলে ৪ প্যাকেট ইয়াবা ট্যাবলেট রাখা ছিল। ইয়াবাগুলোর দিকে দেখিয়ে, দাবিকৃত টাকা না দিলে এসব ইয়াবা দিয়ে চালান করার হুমকি দেন ওসি।
অভিযোগে বলেন, রাতে তার বাবার কাছে ৫ লাখ টাকা দাবি করা হয়। এত টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে পরে ২ লাখ টাকায় ওসি রাজি হন। পরের দিন সকালে বাবা থানায় গিয়ে স্থানীয় কফিল চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে নগদ ১ লাখ ১০ হাজার টাকা দিয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় আমাকে নিয়ে আসেন।
এ ঘটনার বিষয়ে নয়াপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান কফিল উদ্দিন বলেন, টাকা দিয়ে জালালকে থানা থেকে নিয়ে আসা হয়। পরে শুনেছি তাকে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে এএসআই জামান মিয়া বলেন, উপরের নির্দেশ পালন করতে বাধ্য। এ বিষয়ে এখন কোনো কথা বলব না।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে ওসি খন্দকার তবিদুর রহমান বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে আনা হয়েছে। তাকে মারধর করা হয়নি। টাকা নেওয়া হয়নি।
চেয়ারম্যান জানিয়েছেন টাকা দেওয়ার বিষয়ে- উত্তরে ওসি খন্দকার তবিদুর রহমান বলেন, কেন বলেছেন আমি জানি না।