পূবাইলে বন্ধের নির্দেশের পরও চলছে স্কুলমাঠে মেলা
গাজীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২১ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:১৬ পিএম
গাজীপুর মহানগরীর পূবাইল উচ্চ বিদ্যালয় এবং পূবাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে চলমান ১০ দিনব্যাপী দশমী মেলা বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু অভিযোগ আছে এক ঘণ্টার মধ্যে মেলা ভাঙার কথা বলা হলেও দুপুর দেড়টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত একটা দোকানও কেউ সরায়নি।
সোমবার সকালে জেলা প্রশাসনের ওই পক্ষ থেকে পূবাইল ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা মো. আরিফ উল্লাহ মেলা কর্তৃপক্ষকে এক ঘণ্টার মধ্যে মাঠের সব দোকানপাট সরিয়ে নেওয়ার কথা জানিয়ে দেন।
এ বিষয়ে জানতে দোকানিদের নেতা বড় মনিরের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
জানা গেছে, পূবাইল থানা বিএনপির সভাপতি মনির হোসেন বকুলের সমন্বয়ে স্থানীয় বিএনপির কিছু ব্যক্তি ১০ দিনের জন্য ওই মাঠ ১১ লাখ টাকায় দোকানিদের কাছে ইজারা দেন। মেলাটি আরও ৮-৯ দিন চলার কথা। রোববার দিবাগত রাতে নগরীর ৪১নং ওয়ার্ডে ঐতিহ্যবাহী দশমী উপলক্ষে সমাপনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার সকালে প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে এ পূজার সমাপ্তি হয়; কিন্তু পূজার যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষ হলেও ১০ দিনব্যাপী মেলা চালিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয় এবং পূবাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ আমিরুল ইসলামের একটি চিঠি সিটি এসবির বরাবর ইস্যু করে তা মেলার অনুমোদন হিসেবে চালিয়ে দেওয়া হয়।
অপরদিকে ওসির ওই ইস্যুকৃত পত্রটি দেখিয়ে দোকানিদের কাছ থেকে ৮ লাখ টাকা আদায় করা হয়।
পূবাইল বাজার রাধা মাধব কেন্দ্রীয় মন্দিরের সভাপতি গোবিন্দ সাহা জানান, প্রতিবার আমরা নিজেরাই উদ্যোগ নিয়ে দশমী উদযাপন করতাম; কিন্তু এবার বিএনপির পূবাইল থানা সভাপতি মনির হোসেন বকুলের সমন্বয়ে আফজালরা নিয়ে নিয়েছেন। আমাদের মন্দিরের জন্য তারা ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা দিয়েছেন।
পূবাইল থানা বিএনপির সভাপতি মনির হোসেন বকুল যুগান্তরকে জানান, দশমী হিন্দু সম্প্রদায়ের উৎসব, স্কুলমাঠে মেলার জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ অনুমতি দিয়েছে। সবকিছু হিন্দুরাই করছেন।
পূবাইল উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আলমগীর হোসেন জানান, আগামী রোববার থেকে স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা। এ অবস্থায় স্কুল মাঠে দশমী মেলার কারণে অভিভাবকরা উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় আছেন।
পূবাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পিয়া রানী দাস জানান, আমার করার কিছুই নাই। সকালে স্কুলের বারান্দা থেকে মেলার মালামাল অপসারণ করেছি। মেলার কারণে স্কুলের শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি একবারেই কম।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন সিটি এসবির ডিসি আবুল বাশার আতিক জানান, পূবাইল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দশমী মেলার কোনো অনুমোদন দেওয়া হয়নি। প্রতিমা বিসর্জনের পর আর মেলা থাকবে না।