বগুড়ার গাবতলীতে পরকীয়ায় বাধা দেওয়ায় আমিনুর ইসলাম নামে এক ব্যক্তি তার স্ত্রী লিপি বেগমের (৪৫) গলায় ফাঁস দেওয়ার পর শরীরে অ্যাসিড নিক্ষেপ করেছেন। শনিবার রাতে উপজেলার বাগবাড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
গুরুতর অবস্থায় লিপি বেগমকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ছিলিমপুর মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আনিস জানান, দাম্পত্য কলহে অ্যাসিড নিক্ষেপ করায় গৃহবধূর গলা ও হাত ঝলসে গেছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, অ্যাসিড সন্ত্রাসের শিকার গৃহবধূ লিপি বেগম জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার আটুল গ্রামের আমিনুল ইসলামের স্ত্রী। আমিনুল বগুড়ার গাবতলী উপজেলার বাগবাড়ি গ্রামে আশা এনজিওতে লোন অফিসার হিসেবে কর্মরত। তিনি ২-৩ দিন আগে গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দাম্পত্য কলহের জের ধরে স্ত্রী লিপি বেগম ও ছেলে আবিদকে (১৬) বাড়ি থেকে বের করে দেন। তারা শনিবার রাতে বগুড়ার গাবতলীর বাগবাড়ি গ্রামে আমিনুর ইসলামের ভাড়া বাসায় উঠার চেষ্টা করেন। আমিনুর দরজা না খোলায় আশপাশের লোকজন ভিড় করেন।
বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে আমিনুর রশি দিয়ে স্ত্রী লিপির গলায় ফাঁস দেন। এছাড়া অ্যাসিড জাতীয় দাহ্য পদার্থ নিক্ষেপ করলে লিপি বেগম হাত দিয়ে প্রতিরোধের চেষ্টা করেন। অ্যাসিড হাত ও গলায় লেগে ঝলসে যায়। স্থানীয়রা লিপি বেগমকে উদ্ধার করে রাত সাড়ে ৯টার দিকে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে ভর্তি করে দেন।
লিপির ছেলে আবিদ জানান, তার বাবা আমিনুর পরকীয়ায় আসক্ত। মা বাধা দেওয়ায় তাকে দীর্ঘদিন ধরে হত্যার চেষ্টা করা হচ্ছিল। শনিবার রাত ৮টার দিকে তার সামনেই অ্যাসিড মেরে মাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে।
আবিদ এ ঘটনায় জড়িত তার বাবা এনজিও কর্মী আমিনুর ইসলামের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছে। সে আরও জানায়, এ ব্যাপারে থানায় মামলা করা হবে।
এ প্রসঙ্গে এনজিও আশার গাবতলীর বাগবাড়ি শাখার ব্যবস্থাপক আবদুস সায়েম জানান, গৃহবধূ লিপি বেগম প্রায় এক মাস আগে জেলা ব্যবস্থাপকের কাছে তার স্বামীর বিরুদ্ধে ভরণপোষণ না দেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ করেছেন। গত ১৪ অক্টোবর ব্যবস্থাপক সমস্যার সমাধান করতে লোন অফিসার আমিনুর ইসলামকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। তবে শনিবার রাতে স্ত্রীর শরীরে অ্যাসিড নিক্ষেপের বিষয়ে তার কিছু জানা নেই।
গাবতলী থানার ওসি আশিক ইকবাল জানান, লোকমুখে এনজিও কর্মীর বিরুদ্ধে গৃহবধূর শরীরে অ্যাসিড নিক্ষেপের কথা শুনেছেন। রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত মামলা হয়নি। মামলা পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।