এএসপিদের কুচকাওয়াজ স্থগিতের প্রশ্নে নীরব স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
রাজশাহী ব্যুরো
প্রকাশ: ২০ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:৫৮ পিএম
রাজশাহীর সারদায় ৪০তম বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডারে নিয়োগ পাওয়া সহকারী পুলিশ সুপারদের (এএসপি) প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ স্থগিত করা হয়েছে। এ নিয়ে সাংবাদিকদের করা প্রশ্ন এড়িয়ে গেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
রোববার দুপুরে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি) সদর দপ্তরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন তিনি। ব্রিফিংয়ে তিনি বাজারদর ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে কথা বললেও এএসপিদের কুচকাওয়াজ স্থগিতের বিষয়ে নীরব ভূমিকায় ছিলেন।
ব্রিফিংয়ে পুলিশ একাডেমির ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এ ধরনের ঘটনার কারণ জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘ওটা ক্লিয়ার করা হইছে! ভালো থাকেন।’ এরপরই ব্রিফিং শেষ করে চলে যান উপদেষ্টা। এ সময় আইজিপি ময়নুল ইসলাম তার সঙ্গে ছিলেন।
বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে এএসপিদের কুচকাওয়াজে অভিবাদন গ্রহণসহ কয়েকটি সফরসূচি নিয়ে রাজশাহী যান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। শনিবার রাতেই তিনি পুলিশ একাডেমি পৌঁছান এবং সেখানেই রাতযাপন করেন। রোববার সকালে প্যারেড গ্রাউন্ডে তার কুচকাওয়াজে প্যারেড পরিদর্শন ও অভিবাদন গ্রহণের কথা ছিল।
এদিকে হঠাৎই শনিবার রাতে সকালের কুচকাওয়াজ স্থগিত করার কথা জানানো হয়। ‘অনিবার্য কারণবশত’ এটি স্থগিত করা হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানায়। অনিবার্য কারণ কী তা স্পষ্ট করা হয়নি।
সাধারণত বিসিএসের মাধ্যমে নিয়োগ পেয়ে পুলিশ ক্যাডারের কর্মকর্তারা সারদায় এক বছরের মৌলিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। এরপর সমাপনী কুচকাওয়াজের মাধ্যমে তাদের এই প্রশিক্ষণ শেষ হয় এবং তারা মাঠপর্যায়ে দায়িত্ব পালনের সুযোগ পান।
গত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ৪০তম বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডারের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। ব্যাচে অন্তত ৬২ ছাত্রলীগ নেতা নিয়োগ পান বলে অভিযোগ উঠেছে। তাদের সমাপনী কুচকাওয়াজে অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকতে পুলিশ একাডেমির পক্ষ থেকে ছাত্র আন্দোলনের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মারকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। শনিবার রাতে সেই আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যানের কথা ফেসবুকে জানান আম্মার।
আমন্ত্রণপত্রের ছবিতে লাল ক্রস এঁকে দিয়ে এর ক্যাপশনে তিনি লেখেন, ‘দাওয়াতটা স্বজ্ঞানে প্রত্যাখ্যান করছি! কারণ এক. এই ৬২ এএসপি হাসিনার আমলে নির্বাচিত হইছে।...কোনো রকম তদন্ত ছাড়াই আওয়ামী দোসরদের এএসপি পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমাদের ভাইদের মৃত্যুর মিছিল এখনো চলছেই। এমতাবস্থায় এই দোসরদের নিয়োগ এবং প্রশিক্ষণ দেওয়া মানে শহিদদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করা।’
ফেসবুকে আরেকটি স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, ‘প্রোগ্রাম ক্যান্সেল করেছে পুলিশ একাডেমি সারদা।...কিছু বুঝলেন? আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের আমরা কখনো গ্রহণ করব না। তদন্ত হোক পরে যোগ্য ব্যক্তি নিয়োগ পাক।’
উল্লেখ্য, ২০০২ সালে প্রবেশনারি ২১ এএসপিকে পাসিং আউট থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল ছাত্রলীগ বিবেচনায়। ২০০৯ সালে যদিও তৎকালীন সরকার বাদ পড়া এসব এএসপিকে জ্যেষ্ঠতাসহ পদোন্নতি দিয়ে চাকরিতে পুনর্বহাল করেছিলেন।