মাদারগঞ্জে মাদ্রাসা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে শিক্ষকদের সংবাদ সম্মেলন
মাদারগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৪৮ পিএম
ব্যানারের ছবিতে অধ্যক্ষ ওয়াহেদ
জামালপুরের মাদারগঞ্জে মিলনবাজার ভাংবাড়ী আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুল ওয়াহেদের বিরুদ্ধে অযৌক্তিক কারণে বেতন বন্ধের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছেন একই মাদ্রাসার তিন শিক্ষক-কর্মচারী।
শনিবার মাদারগঞ্জ প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে ওই মাদ্রাসার সহকারী গ্রন্থগারিক কাম-ক্যাটালগার আশরাফুল ইসলাম, অফিস সহকারী কাম-হিসাব সহকারী ইসমাইল হোসেন ও অফিস সহায়ক কাম-কম্পিউটার অপারেটর রোকমা আক্তার জানান, ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর অধ্যক্ষ আব্দুল ওয়াহেদ কোনো নোটিশ না দিয়ে তাদের বেতন-ভাতা বন্ধ করে দেন। বেতন বন্ধের কারণ জানতে চাইলে অধ্যক্ষ তাদের কাছে টাকা দাবি করেন।
অভিযোগকারী আতিকুর রহমান জানান, ২০১৪ সালের ২৮ ডিসেম্বর নিম্নমান সহায়ক কাম-কম্পিউটার অপারেটর পদে তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু বেতন এমপিওভুক্ত না করিয়ে মূল রেজুলেশন বহি থেকে তার (আতিকুর রহমান) নাম ফ্লুইট দিয়ে মুছে অধ্যক্ষের সহোদর ভাই আব্দুল মোতালেবের নাম লিখে তার বেতনভাতা এমপিওভুক্ত করানো হয়।
আতিকুর রহমান জানান, ২০১৪ সালে আব্দুল মোতালেব বিদেশে থাকায় নিয়োগ পরীক্ষায় অনুপস্থিত ছিলেন। ওই পরীক্ষায় তিনি (আতিকুর রহমান) প্রথম হওয়ায় নিয়োগ পান। কিন্তু ২০২৩ সালে আব্দুল মোতালেব বিদেশ থেকে আসার পর রেজুলেশন বহি থেকে তার নাম মিশিয়ে নিম্নমান সহকারী কাম-কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে আব্দুল মোতালেবের নাম অন্তর্ভুক্ত করে বেতন এমপিওভুক্ত করান অধ্যক্ষ আবুল ওয়াহেদ।
তিনি বলেন, অধ্যক্ষের এসব অনৈতিক অচরণের প্রতিকার চেয়ে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের মহাপরিচালকের বরাবর একাধিক লিখিত অভিযোগের পর তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবরে প্রতিবেদন দেন মাদারগঞ্জ উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার মোহাম্মদ শফিকুল হায়দার। কিন্তু এখন পর্যন্ত অধ্যক্ষ আব্দুল ওয়াহেদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
অভিযুক্ত অধ্যক্ষ আব্দুল ওয়াহেদ জানান, মাদারগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফাইযুল ওয়াসিমা নাহাতের সঙ্গে তার কথা হয়েছে। যেসব শিক্ষকের বেতন বন্ধ করা হয়েছে, তাদের বেতন ছাড় করা হবে। তবে জালিয়াতির মাধ্যমে নিজের সহোদর ভাই আব্দুল মোতালেবকে নিম্নমান সহকারী কাম-কম্পিউটার অপারেটর পদে নিযুক্ত করে বেতন এমপিওভুক্ত করানোর বিষয়ে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- প্রেস ক্লাবের সভাপতি মির্জা হুমায়ুন কবীর, সাধারণ সম্পাদক জুলফিকার বাবলু, সহ-সাধারণ সম্পাদক খাদেমুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক হাফিজুর রহমান, সদস্য আলপনা জান্নাত, এম আর সাইফুল, মোহাম্মদ শাহীন, আনিছুর রহমান আইয়ুব ও বজলুর রহমান খান।
অভিযোগ তদন্তে দায়িত্বপ্রাপ্ত একাডেমিক সুপারভাইজার শফিকুল হায়দার সাংবাদিকদের জানান, শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন বন্ধের অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদন তিনি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবরে পাঠিয়েছেন। তবে জালিয়াতির মাধ্যমে অধ্যক্ষ আব্দুল ওয়াহেদের ভাইকে নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত চলমান আছে।