Logo
Logo
×

সারাদেশ

প্রজনন নিষেধাজ্ঞায় লাভবান ভারতের জেলেরা

Icon

চরফ্যাশন (ভোলা) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ১১:৪৮ এএম

প্রজনন নিষেধাজ্ঞায় লাভবান ভারতের জেলেরা

ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে মাছ ধরায় ২২ দিনের (ডিম ছাড়ার সময়) নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে চরফ্যাশনের মেঘনার তেঁতুলিয়া ও সাগর মোহনার ৭ হাজার বর্গকিলোমিটার অভয়াশ্রম এলাকায়। মৌসুমের শেষ সময়ও আশানুরুপ ইলিশ না পাওয়ায় হতাশা নিয়ে বাড়ি ফিরেছে জেলেরা। 

অন্যদিকে অবরোধের ফলে লাভবান হচ্ছে ভারতের জেলেরা।  জেলেরা বলছেন, তারা অভাব-অনটনের মধ্যে থেকেও নিষেধাজ্ঞার সময় মাছ ধরেন না। অথচ ভারতের জেলেরা তখন বাংলাদেশের সীমানায় প্রবেশ করে মাছ ধরে নিয়ে যান। তাই তারা ভারতের সঙ্গে একই সময়ে বঙ্গোপসাগরে নিষেধাজ্ঞার দেওয়ার দাবি জানান।

ইলিশের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য নিরাপদ প্রজনন নিশ্চিতে বছরের বিভিন্ন সময় মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা দিয়ে থাকে সরকার। প্রতি বছর ১৯ মে মধ্যরাত থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত এই ৬৫ দিন সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। 

এছাড়া ভোলার দুটি এবং চাঁদপুর, বরিশাল ও শরীয়তপুরের একটি করে ইলিশের মোট পাঁচটি অভয়ারণ্যে এপ্রিল ও মে মাসে মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকে। আর পটুয়াখালী অভয়ারণ্যে নভেম্বর থেকে জানুয়ারিতে ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধ। 

পাশাপাশি প্রতি বছরের নভেম্বর থেকে জুন পর্যন্ত আট মাস জাটকা ধরায় নিষেধাজ্ঞা থাকে। আর এই নিষেধাজ্ঞা ভারতের জলসীমায় প্রতি বছর এক বার আর তা দেয় ১৫ এপ্রিল থেকে ১৪ জুন (৬১ দিন)। 

জেলেদের অভিযোগ, বাংলাদেশের নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকার মধ্যে ভারতীয় জেলেরা দেদারছে বাংলাদেশের জলসীমায় প্রবেশ করে মাছ ধরে নিয়ে যাচ্ছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের লাখ লাখ জেলে এবং মাছের উৎপাদনও ব্যাহত হচ্ছে। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জেলে বলেন, ‘পেটে পাথর বেঁধে আমরা মাছ ধরা থেকে বিরত থাকি। আর আমাদের পাশের দেশের জেলেরা আমাদের সীমানায় ঢুকে মাছ ধরে নিয়ে যায়। এতে না হয় জেলেদের লাভ, না বাড়ে মাছের উৎপাদন। আমরা কষ্ট করতে প্রস্তুত আছি, যদি তাতে দেশের ভালো হয়। কিন্তু এতে তো ক্ষতি ছাড়া কোনো লাভ হচ্ছে না। দুই দেশে মাছ ধরা বন্ধের একই সময় থাকলে ভালো হবে। 

জেলে মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘মা ইলিশ রক্ষায় তারা এ নিষেধাজ্ঞা অক্ষরে অক্ষরে পালন করবেন। নৌকা-জাল সব তুলে রাখা শেষ। এই ২২ দিন তারা মাছ শিকারে যাচ্ছেন না। তবে সরকারের কাছে দাবি, তাদের যাতে চাল-ডাল দেওয়া হয়। ’

জেলে মো. জয়নাল মাঝি ও আলাউদ্দিন মাঝি বলেন, অবরোধ দেওয়ার আগে এবার নদীতে ভালো মাছ পেয়েছি। তাই প্রতিবছরের ন্যায় এবছরও নদী ও সাগরে মাছ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা মেনে চলব। নিষেধাজ্ঞার এই সময়ে ছেলে-সন্তান নিয়ে সংসার চালাতে একটু কষ্ট হলেও মা ইলিশ রক্ষার জন্য নদীতে মাছ ধরতে যাবেন না।

সামরাজ ঘাট ঘুরে দেখা যায়, সরকারি নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় জেলেরা নৌকা ও ট্রলার নদী থেকে উঠিয়ে এনে ট্রলার থেকে ইঞ্জিন খুলে রাখছেন। আবার কেউ কেউ জাল ঠিক করে বস্তা ভরছেন। 

ঘাটের আব্দুল খলিল মহাজন জানান, ইলিশের ডিম ছাড়ার জন্য সরকার যে নিষেধাজ্ঞা দেয় তা সামরাজ ঘাটের সব জেলেরাই মেনে চলে। অবরোধ চলাকালে জেলেরা নদীতে যায় না। অবরোধ শেষে পূণরায় আবার নদীতে ফিরবেন।

উল্লেখ্য, আগামী ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন মা ইলিশ রক্ষায় সকল ধরনের মাছ ধরা, পরিবহণ, সংরক্ষণসহ সকল ধরনের কার্যক্রম বন্ধ করেছে মৎস্য অধিদপ্তর।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম