ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন কী পূরণ হবে দরিদ্র পত্রিকা বিক্রেতার কন্যার
আব্দুল কুদ্দুছ বসুনিয়া, কাউনিয়া (রংপুর)
প্রকাশ: ১৭ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৪৩ পিএম
দরিদ্র ঘরে জন্ম আফরোজা আক্তার মাফির। নতুন বই কিনে পড়ালেখা করতে পারেনি সে। বন্ধুদের কাছে ধার করে নেওয়া বই দিয়ে সে লেখা পড়া করে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। এক বেলা খাবার জুটলেও আরেক বেলা খাবার জুটত না মাফির ভাগ্যে।
দরিদ্রতা আর নানা প্রতিকূলতার সঙ্গে যুদ্ধ করে কাউনিয়া মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে তিনি জিপিএ-৫ পেয়েছেন। জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষাতেও জিপিএ -৫ পেয়েছেন তিনি।
আফরোজা আক্তার মাফি উপজেলার তিস্তা নদীর পাড় ঘেঁষা পাঞ্জরভাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা দরিদ্র পত্রিকা বিক্রেতা (হকার) মো. আনোয়ার হোসেনের মেয়ে। বাড়ি ভিটা ছাড়া আর কোনো জমি- জমা নেই তাদের। তার পিতা ঝড় বৃষ্টি প্রখর রোদ উপেক্ষা করে প্রতিদিন বাইসাইকেলে চড়ে মাইলের পর মাইল পথ অতিক্রম করে হাট বাজারে, বাড়ি বাড়ি গিয়ে পত্রিকা বিক্রি করে যা আয় হয় তাই দিয়ে কোনো রকমে চলে তাদের সংসার। তাছাড়াও বাকি দুবোনসহ তার লেখা পড়ার খরচ জোগাতে হিমসিম খেতে হয় তার পিতাকে।
মাফির পিতা আনোয়ার হোসেন বলেন, আগে আমি একাই ৪৫০টি পত্রিকা বিক্রি করতাম এখন সে জায়গায় পত্রিকা বিক্রি করছি মাত্র ২১০টি। এখন পাঠক অনেক কমে গেছে। এখন সবাই অলনাইনে পত্রিকা পড়েন। প্রিন্ট পত্রিকার কাটতি অনেক কমে গেছে। তাই আমার রোজগারও কমে গেছে অর্ধেকে। ৩ মেয়ে আর আমরা ২ জন মিলে ৫ জনের সংসার।
তিনি বলেন, পত্রিকা বিক্রেতা বাবার সামান্য রোজকারের টাকায় কোনো রকমে চলে আমাদের সংসার। পড়ার খরচ জোগাতে অন্যের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে প্রাইভেট পড়ায়।
মাফির মা রাজিয়া সুলতানা জানান, অনেক স্বপ্ন লেখাপড়া শিখে তার মেয়ে ডাক্তার হবে। কিন্তু সেই স্বপ্ন পূরণে বড় বাধা দরিদ্রতা। ডাক্তারি পড়ার অর্থের যোগান হবে কী ভাবে? এত টাকা আমরা পাবো কোথায় কে এগিয়ে আসবে আমাদের মেয়ের স্বপ্ন পূরণে।
এ চিন্তায় বিভোর মাফির পিতা-মাতা। মাফির পিতা মাতা মেয়ের স্বপ্নপূরণে বিত্তবান মানুষের কাছে সহযোগিতা কামনা করেছেন।