চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে ২ জাহাজে আগুনের তদন্ত শুরু
চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ: ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৩৫ পিএম
কুতুবদিয়ায় চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে এলপিজি (তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস) বহনকারী দুটি জাহাজে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিটি কাজ শুরু করেছে। সোমবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন কমিটির সদস্যরা।
এদিকে দীর্ঘ ৩৬ ঘণ্টা পর লাইটার জাহাজ ‘বিএলপিজি সোফিয়া’র আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। শনিবার রাতে লাগা আগুন সোমবার সকাল পর্যন্তও জ্বলছিল। তবে দুপুরের দিকে নিভে যায়। চট্টগ্রাম বন্দর সূত্রে এসব তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
শনিবার রাত পৌনে ১টার দিকে তানজানিয়ার পতাকাবাহী মাদার ট্যাংকার (বড় আকারের সমুদ্রগামী জাহাজ) ‘ক্যাপ্টেন নিকোলাস’ এবং বাংলাদেশি একটি প্রতিষ্ঠানের ভাড়া করা লাইটার ট্যাংকার বিএলপিজি সোফিয়াতে আগুন লাগে। ওই সময় বড় ট্যাংকারটি থেকে লাইটার ট্যাংকারে পাইপের মাধ্যমে গ্যাস লোড করা হচ্ছিল।
বিভিন্ন আমদানিকারকের ৪২ হাজার মেট্রিক টন এলপিজি নিয়ে আসা নিকোলাসের আগুন জাহাজে থাকা ইকুইপমেন্টের সাহায্যে নাবিকরা নিভিয়ে ফেলতে সক্ষম হন। লাইটার জাহাজ সোফিয়ার আগুন তৎক্ষণাত নিয়ন্ত্রণে আসেনি। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালায়।
রোববার রাতের দিকে তীব্রতা কমে এলেও মাঝেমধ্যে আগুনের ফুলকি দেখা যাচ্ছিল। তার আগেই জাহাজের ৩১ নাবিককে জীবিত উদ্ধার করা হয়।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক যুগান্তকরকে বলেন, সোমবার সকালেও জাহাজটিতে আগুন দেখা গেছে। তবে দুপুরের দিকে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
তিনি জানান, নৌপরিবহণ এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) ড. এম সাখাওয়াত হোসেনের নির্দেশে এ ঘটনা তদন্তে গঠিত ৯ সদস্যের কমিটি এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছে। বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (হারবার ও মেরিন) কমডোর এম ফজলার রহমানকে প্রধান করে গঠিত কমিটির সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তারা অগ্নিকান্ডের কারণ ও ক্ষয়ক্ষতিসহ আনুষাঙ্গিক অন্যান্য বিষয় খতিয়ে দেখে রিপোর্ট জমা দেবেন। তাই এ বিষয়ে প্রকৃত তথ্য পেতে আরও কয়েক দিন অপেক্ষা করতে হবে। কমিটিকে ৫ কার্যদিবসের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত দুই সপ্তাহের মধ্যে বাংলাদেশের জলসীমায় এ নিয়ে জ্বালানিবাহী চারটি জাহাজে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটল। গত ৩০ সেপ্টেম্বর বন্দরের ডলফিন জেটিতে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের মালিকানাধীন বাংলার জ্যোতি নামে একটি অয়েল ট্যাংকারে বিস্ফোরণের পর আগুন লাগে। ওই ঘটনায় তিনজনের মৃত্যু হয়। এরপর ৫ অক্টোবর চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে বাংলার সৌরভ নামে একই সংস্থার আরেকটি তেলবাহী জাহাজে আগুন লাগে। অল্প সময়ের ব্যবধানে জ্বালানিবাহী চারটি জাহাজে আগুন লাগার ঘটনায় রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে।