পার্বত্য ভিক্ষুসংঘ বাংলাদেশসহ সম্মিলিত বৌদ্ধ ভিক্ষুসংঘের পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী এবার পাহাড়ে কঠিন চীবর দানোৎসব উদযাপিত হচ্ছে না। তবে ১৭ অক্টোবর হতে শুভ প্রবারণার মধ্য দিয়ে অন্যান্য বৌদ্ধধর্মীয় উৎসব পালিত হবে।
সোমবার সকালে রাঙামাটি পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে ‘শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা ২০২৪ ও অন্যান্য বৌদ্ধ ধর্মীয় উৎসব উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মতবিনিময়’ সভায় বিষয়টি জানানো হয়। তবে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের প্রতি কঠিন চীবর দানোৎসবসহ ধর্মীয় সব উৎসব নির্ভয়ে পালনের আহবান জানান রাঙামাটির পুলিশ সুপার।
এর আগে ৬ অক্টোবর রাঙামাটি শহরের কাঁঠালতলী মৈত্রী বিহারে সংবাদ সম্মেলন করে সম্প্রতি পাহাড়ে ঘটে যাওয়া সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ঘটনা ঘিরে নিরাপত্তাজনিত কারণে এ বছর কঠিন চীবর দানোৎসব বাতিলের ঘোষণা দেন সম্মিলিত বৌদ্ধ ভিক্ষুসংঘ। এরপর প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাহাড়ে কঠিন চীবর দানোৎসব উদযাপনের জন্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আশ্বাস দেওয়া হয়।
কঠিন চীবর দানোৎসব বৌদ্ধদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব। প্রতি বছর শুভ প্রবারণার মধ্য দিয়ে বিহারে বিহারে দুই দিনব্যাপী এ উৎসবের আয়োজন করা হয়, যা চলে মাসজুড়ে।
সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় রাঙামাটি পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত ‘শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা-২০২৪ ও অন্যান্য বৌদ্ধধর্মীয় উৎসব উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মতবিনিময়’ সভায় পুলিশ সুপার ড. এসএম মফহাদ হোসেন বলেন, সম্প্রতি বৌদ্ধভিক্ষুদের সঙ্গে আলোচনা করলে তারা এ বছর কঠিন চীবর দানোৎসব উদযাপন করা হবে না বলে প্রশাসনকে অবহিত করেছেন। তবে প্রবারণাসহ অন্যান্য বৌদ্ধধর্মীয় উৎসব অনুষ্ঠিত হবে বলেও জানান তারা। তবে আমি অনুরোধ জানাব, আপনারা সব উৎসব নির্ভয়ে পালন করতে পারবেন। নিরাপত্তার কোনো অভাব হবে না। আপনারা পরামর্শ দেবেন, যেখানে নিরাপত্তার প্রয়োজন আমরা সেখানে নিরাপত্তা দেব।
মতবিনিময় সভায় আলোচনায় অংশ নেন- রাঙামাটি রাজবন বিহার পরিচালনা কমিটির সহ-সভাপতি নিরূপা দেওয়ান, কাঁঠালতলী মৈত্রী বিহারের সাধারণ সম্পাদক পূর্ণ চন্দ্র দেওয়ান, জেলা বিএনপির সভাপতি দীপন তালুকদার দীপু, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মামুনুর রশিদ মামুন, জেলা জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি মনছুর আলমসহ বিভিন্ন বৌদ্ধ বিহারের প্রতিনিধিরা।
এ সময় পাহাড়ি বাঙালি সংঘাত সহিংসতার কথা ভুলে গিয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সহাবস্থান অটুট রাখতে কঠিন চীবর দানোৎসবের ভূমিকা বিশাল উল্লেখ করে পাহাড়ি বাঙালি সবাই মিলেমিশে উৎসবটিকে সাফল্যমণ্ডিত করার একাত্ম প্রকাশ করেন বক্তারা।