দৌলতদিয়ায় ছাত্রদল কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা
গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ১১:৪৪ এএম
নিহত ছাত্রদল নেতা
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে ফারুক সরদার (২৮) নামে এক ছাত্রদল কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। শনিবার দিবাগত রাত ৯টার দিকে উপজেলার দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ফারুক দৌলতদিয়া ইউনিয়নের সোহরাব মণ্ডলপাড়ার পল্লী চিকিৎসক শহিদ সরদারের ছেলে। তিনি দৌলতদিয়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের কর্মী ছিলেন বলে জানা গেছে।
হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন ফারুকের বন্ধু আলামিন (২১) নামে আরেক যুবক। সে দৌলতদিয়া শামসু মাষ্টার পাড়ার আব্দুস সালামের ছেলে।
নিহত ফারুকের ভাই মনিরুজ্জামান জানান, দুর্গাপূজা উপলক্ষে পূজা শুরুর দিন থেকে দৌলতদিয়া রেলস্টেশনের পাশে মেলা বসেছে। ওই মেলায় জুয়ার আসর বসায় স্থানীয় রিপন ও তার সহযোগীরা। মেলার বিভিন্ন দোকান থেকে প্রতিদিন চাঁদাও তুলছিল তারা। তাদের জুয়ার আসর বসানোর ও চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করে আসছিল ফারুক।
শনিবার রাত ৯টার দিকে দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে রিপনের মুদি দোকানে গিয়ে আবারও রিপনকে চাঁদাবাজি ও জুয়ার আসর বন্ধ করতে বলে ফারুক। এ সময় রিপন ও তার সহযোগীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে ফারুকের মাথা, পিঠ, দুই পা ও বাম হাতে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে মারাত্মক জখম করেন।
পরে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। কিন্তু অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে রাত ১১টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক ফারুককে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে স্থানীয় কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার এবং মেলার চাঁদা ও জুয়ার টাকা ভাগাভাগি নিয়ে ফারুক ও রিপনের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল। এ দ্বন্দ্বের জেরে দুদিন আগে দু’গ্রুপের মধ্যে মারামারি হয়। শনিবার রাতে ফারুক ৪/৫ জন বন্ধু মিলে দৌলতদিয়া যৌনপল্লীর ১ নং গেটে অবস্থান করছিল। এ সময় রিপন (৩০), হুমায়ুন (২৫)সহ ১৫/২০ জন সশস্ত্র অবস্থায় সেখানে উপস্থিত হয়ে ফারুকের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় তারা ফারুককে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে পালিয়ে যায়। হামলাকারীদের ঠেকাতে গিয়ে কয়েকজন আহত হন। সে দৌলতদিয়ার আইনদ্দিন বেপারি পাড়ার রমজান ফকিরের ছেলে। রিপন ছাত্রলীগের কর্মী বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) শরীফ আল রাজীব বলেন, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজনের জন্য চাঁদা তোলাকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের আধিপত্য বিস্তারের প্রচেষ্টা থেকে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। অভিযুক্ত রিপনসহ অন্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ হতে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।