ছবি: সংগৃহীত
ময়মনসিংহের তারাকান্দা প্রেস ক্লাবের (একাংশ) সহসভাপতি সিনিয়র সাংবাদিক স্বপন ভদ্রকে (৬৮) প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করেছে সাগর নামে এক মাদক বিক্রেতা।
শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নগরীর শম্ভুগঞ্জ মাঝিপাড়া এলাকার নিজ বাড়ির কাছে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার পর হত্যাকারী সাগরকে গৌরীপুর উপজেলার সহনাটি ইউনিয়নের পাছার গ্রামের এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পরে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দুটি দেশীয় অস্ত্র জব্দ করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন সাগর।
অভিযুক্ত সাগরের বাড়ি গৌরীপুর উপজেলার সহনাটি ইউনিয়নের পাছার গ্রামে। কিন্তু বসবাস করতেন নগরীর শম্ভুগঞ্জ টানপাড়া এলাকার নানির বাড়িতে। নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডে স্থানীয় সাংবাদিকরা ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়েছেন এবং হত্যাকারীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
পত্রিকা এবং ফেসবুকে মাদকবিরোধী লেখালেখির কারণেই পূর্ব বিরোধের জেরেই সাংবাদিক স্বপন ভদ্রকে খুন করা হয়েছে। তাকে ধারাল দা দিয়ে দুই কাঁধে, ঘাড়ে ও দুই হাতে কুপিয়ে হত্যা নিশ্চিত করেছে।
সাংবাদিক স্বপন ভদ্র ময়মনসিংহ থেকে প্রকাশিত দৈনিক স্বজন ও নবকল্যাণ পত্রিকায় ফুলপুর ও তারাকান্দা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সম্প্রতি নিজের ফেসবুক পেজে এলাকার নানা সমস্যা নিয়ে লেখালেখি করতেন তিনি।
কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি সফিকুল ইসলাম খান জানান, স্বপন ভদ্র বাড়ি থেকে বের হয়ে পাশের রঘুরামপুর টানপাড়া এলাকায় পত্রিকা পড়ছিলেন। খবর পেয়ে ব্খাটে মাদকসেবী সাগর কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে তাকে রাস্তায় ফেলে পালিয়ে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, সাগরের মাদক বেচাকেনা নিয়ে সাংবাদিক স্বপন ভদ্র পত্রিকায় লেখালেখি করায় বছরখানেক আগেও মারধরের শিকার হয়েছিলেন। সেই বিরোধ থেকেই এ হত্যাকাণ্ড বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
যৌতুক আদায়ে স্ত্রীর নগ্ন ছবি নেটে, পর্ণো আইনে আটক স্বামী
ভাঙ্গুড়া (পাবনা) প্রতিনিধি
পাবনার ভাঙ্গুড়ায় স্ত্রীর দায়ের করা মামলায় সিয়াম আলী (২৪) নামে এক যুবককে আটক করেছে ভাঙ্গুড়া থানা পুলিশ।
চলতি বছর সেপ্টেম্বর মাসের ৬ তারিখে তার স্ত্রী পাবনার বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পর্ণোগ্রাফী আইনে মামলাটি দায়ের করেন। বাদীর লিখিত আবেদন পাবনার বিজ্ঞ আমলী ৪নং আদালতের (ভাঙ্গুড়া, চাটমোহর) ম্যাজিস্ট্রেট বেবী নাজনীন আমলে নিয়ে ভাঙ্গুড়া থানাকে এজহার গ্রহনের নির্দেশ দেন। সিয়াম উপজেলার হাটউধুনিয়া গ্রামের আল হেলালের ছেলে। বৃহস্পতিবার রাতে ভাঙ্গুড়া থানা পুলিশ তার নিজ এলাকা থেকে তাকে আটক করে।
যুগান্তরের হাতে থাকা মামলার নথী থেকে জানা যায়, গত ২২ সালের জুলাই মাসের ২৪ তারিখে সিয়ামের সাথে ঐ নারীর বিয়ে হয়। বিয়ের পর যৌতুুকের জন্য শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। বিষয়টি নিয়ে ঐ নারী পাবনার বিজ্ঞ আমলী ৪ নং আদালতে মামলা করে। বিপদ বুঝতে পেরে সিয়াম ঐ নারীকে তার সংসারে ফিরিয়ে নিয়ে মামলা প্রত্যাহার করিয়ে নেয়। এর পর স্বাভাবিক আরচন করে সংসার করতে থাকে এবং কৌশল নিজ স্ত্রীর অন্তরঙ্গ মূহুর্তের কিছু ছবি ও ভিডিও তার মোবাইল ফোনে ধারন করে রাখে। এরপরে আবারও যৌতুকের জন্য শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে। এক পর্যায়ে সিয়াম তার স্ত্রীর ভাইয়ের ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে তার বোনের ধারনকৃত নগ্ন ছবি পাঠিয়ে যৌতুক দাবী করে। যৌতুক না দিলে ঐ ছবি নেটে ভাইরাল করে দেয়ার ভয় দেখায়। বিষয়টি তার ঐ নারীর পরিবার গুরুত্ব না দিলে সিয়াম ঐ নগ্ন ছবি দিয়ে ফেসবুকে একটি ফেইক আইডি খুলে তা ছড়িয়ে দিতে থাকে। পরে ঐ নারী পাবনার বিজ্ঞ আমলী ৪ নং আদালতে যৌতুক, পর্ণোগ্রাফী আইন ও পাবনার পারিবারিক আদালতে তিনটি মামলা দায়ের করে। পর্ণোগ্রাফী আইনে করা মামলায় আদালত ভাঙ্গুড়া থানা পুলিশকে এজহার নিতে নির্দেশ দেয়। নির্দেশনা অনুযায়ী ভাঙ্গুড়া থানা পুলিশ গতকাল রাতে সিয়ামকে আটক করে ও তার কাছে থাকা মোবাইল ফোন জব্দ করে।
ভাঙ্গুড়া থানা পুলিশের সরহকারী উপ-পরিদর্শক রবিউল ইসলাম বলেন, আদালতের নির্দেশনা অনুয়ায়ী মামলা করে সিয়াম কে আটক ও তার কাছে থাকা মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে। তাকে পাবনা আদালতে সোপর্দ করা হবে।