মদনে ভুয়া অভিযোগ দিয়ে ধরা খেলেন কৃষকলীগ নেতা
মদন (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১০ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৫৩ পিএম
নেত্রকোনার মদনে ইউএনও মো. শাহ আলম মিয়ার বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক (ডিসি) বরাবর ভুয়া অভিযোগ করে নিজেই ধরা খেলেন নূরুল আলম কামাল নামে এক কৃষক লীগ নেতা।
কৃষক লীগ নেতা খায়রুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির নাম-ঠিকানা ব্যবহার করে জেলা প্রশাসক বরাবর ভুয়া অভিযোগটি করেন নূরুল আলম কামাল। তবে অভিযোগের বিষয়টি খায়রুল অবগত না থাকায় উল্টো কামালের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগটি করে খায়রুল।
স্থানীয় লোকজন ও লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, জলমহাল থেকে রাজস্ব আত্মসাতের কথাসহ বিভিন্ন বিষয় উল্লেখ করে গত ৪ সেপ্টেম্বর মদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক বরাবর একটি অভিযোগ করেন গোবিন্দশ্রী গ্রামের মৃত সুলতু মিয়ার ছেলে খায়রুল ইসলাম।
এদিকে খায়রুল ইসলাম জীবিকার তাগিদে কয়েক বছর ধরে পরিবার নিয়ে চট্টগ্রামে বসবাস করছেন। ইউএনওর বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। খায়রুল ইসলাম নিরক্ষর মানুষ। তার জাতীয় পরিচয়পত্রে টিপ সহি থাকলেও অভিযোগে খায়রুল ইসলামের স্বাক্ষর ব্যবহার করা হয়েছে।
এ নিয়ে এলাকায় সমালোচনার সৃষ্টি হলে খায়রুল ইসলামের সঙ্গে স্থানীয় সাংবাদিক এবং রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা যোগাযোগ করলে তিনি চট্টগ্রাম থেকে মদন আসেন। পরে জানতে পারেন তার নাম-ঠিকানা ব্যবহার করে গোবিন্দশ্রী গ্রামের মাওলানা আব্দুল মন্নাফের ছেলে কামাল হোসেন মন্ডল ইউএনওর বিরুদ্ধে ভুয়া অভিযোগটি করেন। প্রতারণা করে হয়রানির জন্য কামালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে ২ অক্টোবর জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন খায়রুল ইসলাম।
খায়রুল ইসলাম বলেন, আমি গরিব মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রামে দিনমজুরির কাজ করে সংসার চালাই। ৬ মাস আগে একবার বাড়িতে এসেছিলাম। এরপর আর বাড়ি আসা হয়নি। এখন আমার নাম ঠিকানা ব্যবহার করে ইউএনও স্যারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমি তো ইউএনও স্যারকে চিনি না। জীবনে কখনো তাকে দেখিনি। আমার জীবনে ডিসি স্যারের অফিসে যাইনি। তাই এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দাবি জানিয়েছি।
এ বিষয়ে কৃষক লীগ নেতা নূরুল আলম কামাল জানান, অভিযোগের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। এটা কাদা ছোড়াছুড়ি ছাড়া আর কিছু নয়।
মদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহ আলম মিয়া জানান, গত মাসে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়ার খবর শুনেছি। আমি কোনো অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকলে অবশ্যই আমার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন; কিন্তু উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কেউ এ কাজ করে থাকলে তদন্তের মাধ্যমে তা বের হয়ে আসুক। অপরাধী যেই হোক তার বিরুদ্ধে যেন আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস জানান, দুটি অভিযোগই পেয়েছি। তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তের মাধ্যমে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।