Logo
Logo
×

সারাদেশ

নলছিটিতে ঘুস দিয়েও সহায়তা পাননি ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তরা

Icon

নলছিটি (ঝালকাঠি) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১০ অক্টোবর ২০২৪, ১০:০৬ পিএম

নলছিটিতে ঘুস দিয়েও সহায়তা পাননি ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তরা

নলছিটিতে ঘুসের টাকা দিয়েও ঘূর্ণিঝড় রেমালে ক্ষতিগ্রস্তরা সরকারি সাহায্য পাননি বলে অভিযোগ করেছেন বাছাই প্রক্রিয়ায় সংযুক্ত এক ট্যাগ অফিসারের বিরুদ্ধে।

উপজেলার মগড় ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত আসনের দুই মহিলা ইউপি সদস্য (আশা আক্তার ও ময়না বেগম) এ অভিযোগ করে মঙ্গলবার উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযুক্ত কর্মকর্তা হলেন, উপজেলা পরিসংখ্যান কর্মকর্তা উজ্জল কৃষ্ণ বেপারী। যিনি মঙ্গলবারই নলছিটি থেকে অন্যত্র (ঢাকা হেড অফিসে) বদলি হয়ে গেছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় রেমালে উপজেলার মগড় ইউপির ১৫২ (একশ বায়ান্ন) জন ক্ষতিগ্রস্তকে সম্প্রতি গৃহ নির্মাণের জন্য সরকারি সাহায্য জনপ্রতি এক বান্ডিল (এক বান) টিন ও ৫ হাজার টাকার চেক প্রদান করা হয়।

ইতোপূর্বে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মৌখিক নির্দেশ ওই ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্তদের নামের তালিকা তার কাছে দাখিল করেন ইউপি সদস্যরা। তাদের দেওয়া নামের তালিকা সরজমিনে যাচাই-বাছাইয়ের জন্য উপজেলা পরিসংখ্যান কর্মকর্তা উজ্জ্বল কৃষ্ণ বেপারীকে ওই ইউনিয়নের ট্যাগ অফিসার নিয়োগ করা হয়। ইউপি সদস্যদের দেওয়া তালিকা বাছাইয়ে রাখার আশ্বাস দিয়ে ওই কর্মকর্তা ক্ষতিগ্রস্তদের কাছ থেকে জনপ্রতি এক হাজার টাকা করে ঘুস নেন। 

ইউপি সদস্যরা ক্ষতিগ্রস্তদের কাছ থেকে ওই ঘুসের টাকা তোলেন। কিন্তু ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে টিন ও টাকার চেক বণ্টনকালে ইউপি সদস্যদের দেওয়া তালিকার অনেকেই এই সাহায্য পায়নি। ঘুসের টাকা দিয়েও সাহায্য না পাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয় ক্ষতিগ্রস্তরা।

মগড় ইউনিয়নের সংরক্ষিত আসনের ইউপি সদস্য আশা আক্তার অভিযোগ দেওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমালে ক্ষতিগ্রস্ত ১৫ জনের নামের তালিকা ইউএনও এর মৌখিক নির্দেশে তার কাছে জমা দেন তিনি।

সরজমিনে যাচাইয়ে তা ঠিক রাখার জন্য ট্যাগ অফিসার উজ্জল কৃষ্ণ বেপারীকে জনপ্রতি এক হাজার টাকা করে পনেরো জনের জন্য ১৫ হাজার টাকা দেন তিনি। কিন্তু তার দেওয়া তালিকার ক্ষতিগ্রস্তরা কেউ সাহায্য পায়নি। এতে ক্ষতিগ্রস্তরা তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়েছেন। তারা ভাবছেন তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তিনি ওই কর্মকর্তাকে দেননি। তিনি আরও জানান, ওই কর্মকর্তা ইউনিয়নের ১২ জন ইউপি সদস্যের কাছ থেকেই ওই হারে টাকা নিয়েছেন।

অপর ইউপি সদস্য ময়না বেগম জানান, তিনি ৫ জন ক্ষতিগ্রস্তের কাছ থেকে এনে ওই কর্মকর্তাকে ৫ হাজার টাকা দিয়েছেন। তারাও কেউ সাহায্য পায়নি।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত কর্মকর্তা উজ্জ্বল কৃষ্ণবেপারী সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সরজমিনে গিয়ে যাদের ঘরবাড়ির অবস্থা অত্যন্ত খারাপ দেখেছি, তাদের নাম ঠিক রেখে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে তালিকা দিয়েছি। তাতে অভিযোগকারী ওই মেম্বার সাহেবদের দেওয়া তালিকা থেকে যারা সাহায্য পাওয়ার যোগ্য তাদের কয়েকজনের নামও দিয়েছি। কিন্তু কেন তারা সাহায্য পায়নি তাতো আমি বলতে পারব না। আমিতো চূড়ান্ত কর্তৃপক্ষ নই। আমি শুধু যাচাই-বাছাই করেছি। ইউএনও স্যার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, মেম্বর সাহেবদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে তারা এসব কথা বলছেন।

নলছিটি উপজেলা নির্বাহী অফিসার নজরুল ইসলাম অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, উপজেলায় রেমালে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে টিন ও টাকার চেক স্বচ্ছভাবে বণ্টন করা হয়েছে। আমি ওই কর্মকর্তাকে জিজ্ঞেস করেছি। তিনি সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এরপর ওই মেম্বার সাহেবদের বলেছি যদি একান্ত ক্ষতিগ্রস্ত কেউ সাহায্য না পেয়ে থাকেন, তাদের জন্য ব্যবস্থা করা হবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম