Logo
Logo
×

সারাদেশ

নাটোরে ধান দিয়ে তৈরি দুর্গাপ্রতিমা নজর কাড়ছে দর্শনার্থীদের

Icon

নাটোর প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ১১:১৪ পিএম

নাটোরে ধান দিয়ে তৈরি দুর্গাপ্রতিমা নজর কাড়ছে দর্শনার্থীদের

নাটোরে এবার শারদীয়া দুর্গাপূজায় সোনালি ধান বসিয়ে দেবী দুর্গার প্রতিমা তৈরি করা হয়েছে। পূজা উদযাপনে দেবী দুর্গার প্রতি ভক্তির পাশাপাশি দর্শনার্থীদের দৃষ্টি কাড়তেই ব্যতিক্রমী এ প্রতিমা তৈরিসহ নানা উদ্যোগ নিয়েছেন আয়োজকরা।

পূজায় দুর্গাসহ ৮টি প্রতিমা তৈরি করতে মোট ধান লেগেছে ৫০ কেজি।

জেলা পূজা উদযাপন কমিটি ও জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, নাটোর জেলায় এবার দুর্গাপূজা হবে ৩৫১টি মন্দিরে।

নাটোরের প্রতিমা শিল্পী (কারিগর) বিশ্বজিৎ পাল বলেন, এই মণ্ডপে দুর্গা, গণেশ, সরস্বতী, লক্ষ্মী, কার্তিক, মহিষাসুর ও অসুর প্রতিমা তৈরির জন্য প্রথমে কাঠ, বাঁশ, পাট ও বিচালির ফ্রেম বা কাঠামো তৈরি করা হয়। পরে তাতে মাটি দিয়ে প্রতিমার আকৃতি আনা হয়। সেগুলো শুকিয়ে যাওয়ার প্রাক্কালে মাটি নরম থাকতে প্রতিমাজুড়ে ধান বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রতিমার গায়ে ধান এমনভাবে বসানো হয়েছে দেখলে মনে হয় প্রতিমাগুলো সোনায় মোড়ানো।

বিশ্বজিৎ পালের দাবি, এক মাসের বেশি সময় ধরে চারজন প্রতিমা শিল্পীর রাত দিন প্রচেষ্টার ফসল হিসেবে ব্যতিক্রমী দুর্গা প্রতিমাসহ অন্য প্রতিমাগুলো তৈরি করা সম্ভব হয়েছে। দুর্গাসহ ৮টি প্রতিমা তৈরি করতে মোট ধান লেগেছে ৫০ কেজির মতো। এরপর রং-তুলির আঁচরে চোখ-মুখসহ প্রতিমার আদি রূপ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

বিশ্বজিৎ পাল আরও বলেন, প্রতিমাটি দেখতে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষ আসছেন এবং আমার প্রশংসা করছেন। মানুষের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা পেয়ে তাদের অনেক ভালো লাগছে।

প্রতিমা দেখতে এসে বড়াইগ্রামের স্কুলশিক্ষক নীল মনি সরকার বলেন, জীবনে অনেক জায়গার প্রতিমা দেখেছি, কিন্তু এত সুন্দর প্রতিমা এই প্রথম দেখলাম।

স্থানীয় রবি সুতম সংঘের সাধারণ সম্পাদক পার্থ রায় জানান, রবি সুতম সংঘ প্রতিবছরই নিত্যনতুন দুর্গাপ্রতিমা তৈরি করে। এরই ধারাবাহিকতায় এ বছরে আমরা ধান দিয়ে প্রতিমা তৈরির পরিকল্পনা করি। ধান দিয়ে প্রতিমা নির্মাণ করাটা খুব সহজ কাজ নয়। আমরা প্রতিমা শিল্পী বিশ্বজিৎ পালের সঙ্গে আলোচনা করলে তিনি এই প্রতিমা তৈরি করে দিতে সম্মতি প্রকাশ করেন। প্রতিমা শিল্পীরা একটি একটি করে ধান সুনিপুণভাবে থরে থরে সাজিয়ে প্রতিমাকে সুন্দর করে সাজিয়ে তুলেছেন।

পূজা উদযাপন বিষয়ে জানতে চাইলে নাটোরের পুলিশ সুপার মারুফাত হোসেন বলেছেন, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পূর্ণ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের আশঙ্কার কোনো কারণ নেই। তারা নিশ্চিন্তে তাদের ধর্মীয় উৎসব পালন করবেন। কাউকে কোথাও কোন সমস্যা করতে দেওয়া হবে না।

নাটোরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. মাছদুর রহমান বলেন, একযোগে নাটোরের ৩৫০টি মণ্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হবে। উৎসবটি উপলক্ষে সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই পূজা উদযাপন পরিষদের সদস্য ও হিন্দু ধর্মের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতিতে জেলা পর্যায়ে প্রস্তুতিমূলক মিটিং সম্পন্ন করা হয়েছে। সেখানে পূর্ণ নিরাপত্তার সঙ্গে শারদীয় দুর্গোৎসব পালন করতে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বুধবার ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে শারদীয় দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। ১৩ অক্টোবর রোববার বিজয়া দশমীর মধ্য দিয়ে শেষ হবে এবারের দুর্গাপূজা।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম