হত্যার পর হাসপাতালে স্ত্রীর লাশ রেখে পালাল স্বামী
টেকেরহাট (মাদারীপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৫৮ পিএম
মাদারীপুরের রাজৈরে স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যা করার পর হাসপাতালে লাশ রেখে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার সকালে অভিযুক্ত স্বামী বিদ্যুৎ বালা তার নিজ বাড়িতে গোপালগঞ্জ সদর থানার রাধানগর চামটা গ্রামে এ ঘটনা ঘটায়।
পরে রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে মৃত্যু নিশ্চিত হয়ে স্ত্রী দুর্গা বাড়ৈর (২১) মরদেহ রেখে পালিয়ে গেলে বিষয়টি জানাজানি হয়।
নিহত দুর্গার ৫ মাসের একজন কন্যাসন্তান রয়েছে। তিনি উপজেলার খালিয়া ইউনিয়নের ছাতিয়ান বাড়ি গ্রামের মন্টু বাড়ৈর মেয়ে। এ ঘটনায় বিজলী ঢালী (৪০) ও মালতি বিশ্বাস (৩৪) নামে দুইজনকে আটক করা হয়েছে।
এছাড়া একই দিনে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের উপজেলার আলমদস্তার পাশে ফসলি জমির পানির মধ্যে থেকে রবিউল মৃধা (৩২) ও কবিরাজপুর ইউনিয়নের কিশোরদিয়া গ্রামের একটি গাছের বাগান থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় রুবেল বয়াতী (২৯) নামে দুই যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে রাজৈর থানার পুলিশ।
পুলিশ ও নিহত দুর্গা বাড়ৈর বাবা মন্টু বাড়ৈ জানান, দীর্ঘদিন যাবত যৌতুক দাবিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পারিবারিক কলহ চলে আসছিল। এরই জের ধরে দুর্গাপূজা উপলক্ষে বাড়ি যেতে চাওয়াকে কেন্দ্র করে দুর্গাকে সোমবার রাতে ও মঙ্গলবার সকালে দুই ধাপে বেধড়ক মারধর করে বিদ্যুৎ। পরে তার অবস্থা গুরুতর হয়ে পড়লে রাজৈর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত্যু ঘোষণা করলে লাশ রেখেই বিদ্যুৎ পালিয়ে যায়। এ সময় ঘাতক বিদ্যুতের দুই স্বজন বিজলী ঢালী (৪০) ও মালতি বিশ্বাসকে (৩৪) আটক করে রাজৈর থানার পুলিশ।
অপরদিকে সোমবার রাতে বাড়ি ফেরার পথে নিখোঁজ হয় উপজেলার আলমদস্তা গ্রামের মৃত ওহাব মৃধার ছেলে রবিউল মৃধা (৩২)। পরে মঙ্গলবার সকালে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের পাশে আলমদস্তার এলাকার একটি ফসলি জমির পানিতে রবিউলের লাশটি ভাসতে দেখেন স্থানীয়রা।
এ সময় রাজৈর থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে লাশটি উদ্ধার করে।
এছাড়া নিখোঁজের একদিন পর একই দিন মঙ্গলবার ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার সোনামুখীর চর গ্রামের আ. রব বয়াতীর ছেলে রুবেল বয়াতীর (২৯) লাশ রাজৈর উপজেলার কিশোরদিয়া গ্রামের একটি গাছের বাগান থেকে গলায় রশি দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ।
রাজৈর থানার ওসি মোহাম্মদ মাসুদ খান জানান, লাশ ৩টি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। দুর্গা বাড়ৈ হত্যা ঘটনায় গোপালগঞ্জ থানায় মামলা করবে তার বাবা মন্টু বাড়ৈ। তবে রিপোর্ট হাতে পেলে সব মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।