উপসহকারী প্রকৌশলীকে জামা-কাপড় খুলে মারধরের অভিযোগ
মাগুরা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:৫৫ পিএম
মাগুরায় সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর নির্দেশে একই অফিসে কর্মরত উপসহকারী প্রকৌশলী শিমুল হুসাইনকে বিবস্ত্র করে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। রোববার দুপুরে তাকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
তবে এ ঘটনার সঙ্গে নিজের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নির্বাহী প্রকৌশলী এএম আতিক উল্লাহ।
নির্যাতনের শিকার উপসহকারী প্রকৌশলী শিমুল হুসাইন এবং সহকর্মীরা জানান, ১৪ জুলাই আতিক উল্লাহ নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে মাগুরাতে যোগদান করেন; কিন্তু অধিকাংশ সময় জেলার বাইরে অবস্থান করেন। এতে সড়ক ও জনপথ বিভাগের উন্নয়ন সংস্কার কাজের সঙ্গে সঙ্গে দাপ্তরিক কাজকর্মে নানা জটিলতার সৃষ্টি হয়ে আসছে। অথচ অধস্তন কর্মকর্তা কর্মচারীরা তার কাছ থেকে কোনো সহযোগিতা তো পাচ্ছেন না, উপরন্তু নানা দুর্ব্যবহার ও অসদাচরণের শিকার হচ্ছেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে কর্মরত অধস্তন কর্মকর্তা কর্মচারীরা গত ২ অক্টোবর মাগুরা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে কর্মবিরতির ঘোষণা দেন।
পাশাপাশি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর ২৩ কর্মকর্তা-কর্মচারীর স্বাক্ষরিত ‘গণ বদলির’ আবেদন জানানো হয়। ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এসব কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ এনে রোববার শিমুল হুসাইনের ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে।
মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন উপসহকারী প্রকৌশলী শিমুল হুসাইন বলেন, সকালে অফিসে গিয়ে নিজের কক্ষে বসে কাজ করছিলাম। এর মধ্যে দুপুর ১২টার দিকে একই অফিসে কর্মরত আবদুল আজিজ, মমিন এবং নির্বাহী প্রকৌশলীর ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত সিরাজসহ ৮-১০ জন আমাকে কিলঘুসি মারতে মারতে নির্বাহী প্রকৌশলীর কক্ষে নিয়ে যান। সেখানে উপস্থিত নির্বাহী প্রকৌশলী আতিক উল্লাহ আমার জামা-কাপড় খুলে অফিসের সামনে দাঁড় করিয়ে রাখার নির্দেশ দিলে তারা মারতে মারতে আমার জামা এবং প্যান্ট খুলে ফেলে। এ সময় হাতজোড় করে সম্মানহানি না করতে অনুনয় করলে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে অফিসের সহকর্মীরা আমাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এ বিষয়ে মাগুরা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এএম আতিক উল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি উপসহকারী প্রকৌশলী শিমুল হুসাইনের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, শিমুল নামের ওই উপসহকারী প্রকৌশলী এ অফিসের আগের নির্বাহী প্রকৌশলীর যোগসাজশে সরকারি অর্থ তসরুপের চেষ্টা চালাচ্ছিলেন। তিনি আমার অনুমতি ছাড়া অফিসের বেশকিছু গোপনীয় কাগজপত্র রাজশাহীতে মাগুরার পূর্বতন নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে প্রেরণ করেন। এর মাধ্যমে তারা সরকারি অর্থ লোপাটের সুযোগ পেতেন। বিষয়টি জানতে পেরে ১ অক্টোবর শিমুলকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়। এতে বেকায়দায় পড়ে তিনি আমার বিরুদ্ধে অফিসের অন্যদের ইন্ধন দিচ্ছিলেন। এ বিষয়ে সবার সঙ্গে কথা বলার পর তারা প্রকৃত ঘটনা উপলব্ধি করেছেন। বিধায় তাদের কেউ ওই কর্মকর্তার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছে কিনা সেটি জানি না। তবে বিষয়টি জানার চেষ্টা করছি।