‘ভদ্র’ ইউনিয়নে ধর্ষিত কিশোরী অন্ত:সত্ত্বা, থানায় মামলা
মধুপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:৪৭ পিএম
টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে স্কুল পড়ুয়া এক শিশু ধর্ষণের ঘটনায় স্থানীয় মাতবরদের মীমাংসার আশ্বাসে কালক্ষেপণ। বারবার সময় পেছানোর কারণে শিশুটি অন্ত:সত্ত্বা। পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে।
শুক্রবার ধনবাড়ী থানায় শিশুটির বাবা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা করেছেন। ধনবাড়ী থানার সদ্য যোগদান করা ওসি এসএম শহীদুল্লাহ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
ঘটনাটি ধনবাড়ী উপজেলার বলিভদ্র ইউনিয়নের কেরামজানী গ্রামের পশ্চিম পাড়ার। খেয়াঘাটের মাঝির মেয়ে শিশুটি (১১) স্থানীয় একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী।
ভুক্তভোগী পরিবার ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ওমান প্রবাসী এলাকার প্রভাবশালী লেবু মিয়ার কলেজ পড়ুয়া ছেলে প্রতিবেশী রবিন ওই শিশুটিকে পঞ্চম শ্রেণি থেকে পিছু নেয়। নানাভাবে প্রলুব্ধ করে সম্পর্ক গড়ে তুলে। খেয়াঘাটে বাবার কাছে আসা যাওয়ার পথে শিশুটির সঙ্গে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে রবিন।
এতে শিশুটির শারীরিক অবস্থার পরিবর্তন হতে থাকে। ঘটনা প্রকাশ পাওয়ার পর সমাজে ছি ছি পড়ে যায়। ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য হুমকি দেওয়া হয়। প্রভাবশালী ঘরের ছেলে হওয়ায় তাদের হুমকিতে দরিদ্র শিশুটির পরিবার চুপচাপ থেকেও সহ্য করতে পারছিল না। এদিকে মাতবরদের মীমাংসার বার বার তারিখে সময় পার হতে থাকে।
এ ঘটনা জানাজানি হয়ে গেলে ঢাকায় চাকরি করার কথা বলে রবিন এলাকা ছাড়ে। গণমাধ্যমের কর্মীরা খোঁজ খবর নিতে শুরু করলে বৃহস্পতিবার শেষবারের মতো মীমাংসার বৈঠক বসে। শিক্ষক সালাউদ্দিন, দেলোয়ার হোসেন দোলা, ৭নং ওয়ার্ড মেম্বার ফারুক, সুরুজ মেম্বারসহ অনেকে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গেছে।
বৈঠকে রবিন তার অভিভাবকদের মধ্যে মা, চাচা, বড় ভাই নিয়ে উপস্থিত ছিল। কিন্তু রবিন তার দায় স্বীকার করেনি। রবিনের বন্ধু সোহেল, শান্ত, স্বাধীন,শাহীন,তানজিলদের হুমকিতে শিশুটি ও শিশুটির পরিবার ভীত সন্ত্রস্ত ছিলো বলেও উল্লেখ করা হয়। সেখানে জোর করে মেয়েটির স্বাক্ষর নেওয়ার ঘটনাও ঘটে।
ওই অমীমাংসিত বৈঠক ভুক্তভোগী পরিবারকে শঙ্কিত অবস্থায় ফেলে দেয়। অবেশেষে শুক্রবার শিশুটির বাবা বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ দিলে থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় শুক্রবার মামলা গ্রহণ করে।
ধনবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এসএম শহীদুল্লাহ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে মামলা গ্রহণের পর আসামী গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানান।