নরসিংদীতে বাদীকে বাড়ি থেকে তুলে এনে হলফনামায় স্বাক্ষর, বিচার দাবি
নরসিংদী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:৫৫ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
নরসিংদীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদ ছাত্রদল কর্মী শাওন হত্যা মামলা থেকে শেখ হাসিনা, স্বরাষ্টমন্ত্রী স্থানীয় এমপি ও আওয়ামী লীগ নেতাদের বাঁচাতে বাদীকে বাড়ি থেকে তুলে এনে হলফনামায় স্বাক্ষর রাখার প্রতিবাদ ও ন্যায় বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। একই সঙ্গে আন্দোলনে শাওন সহ ২২ জন শহিদের বিচার চাওয়া হয়।
শনিবার (৫ অক্টোবর) দুপুরে বিএনপির চিনিশপুর কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন করেন শহিদ ছাত্রদল কর্মী শাওন মিয়ার ভাই অলিউল্লাহ।
শহিদ ছাত্রদল কর্মী শাওন মিয়ার ভাই অলিউল্লাহ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, নরসিংদীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরু হওয়ার পর আমার ভাই শহিদ শাওন মিয়া আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করে।
অলিউল্লাহ যোগ করেন, ১৯ জুলাই মাধবদী আন্দোলনে সংক্রিয় ভূমিকা রেখে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে মিছিল বের করে। মিছিলটি সোনালী টাওয়ারের কাছে পৌঁছালে সেখানে পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা শেখ হাসিনার দোষরা মিছিলে নির্বিচারে গুলি করে। আমার ভাই মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। এ ঘটনায় আমি মাধবদী থানায় মামলা করি।
তিনি বলন, গত ২ অক্টোবর কতিপয় আইনজীবী আমাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে আসে। তারা আইনজীবী সমিতিতে এনে আমাকে মামলা তুলে নিতে জোরপূর্বক হলফনামায় স্বাক্ষর নেওয়া হয়। খবর পেয়ে ছাত্রদল সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান নাহিদ ও সাধারন সম্পদক মেহেদী হাসান রিফাস সহ ছাত্রদলের কর্মীরা আমাকে উদ্ধার করে।
শহিদ ছাত্রদল কর্মী শাওন মিয়ার ভাই অলিউল্লাহ বলেন, আমি ভাই হত্যার বিচার চাই। একই সঙ্গে প্রশাসনের কাছে আমি আমার পরিবারের নিরাপত্তাও চাই। সংবাদ সম্মেলনে নিহতের ভাই অলিউল্লাহ ছাড়াও তার মা ও ছাত্রদলের নেতকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
নরসিংদী জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান নাহিদ বলেন, হঠাৎ খবর পাই আন্দোলনে শহীদ হওয়া আমাদের ছাত্রদল কর্মী শাওনের ভাই ও মামলার বাদী অলিউল্লাহকে কতিপয় আইনজীবী বাড়ি থেকে তুলে এনে আইনজীবী সমিতির সভাপতির কক্ষে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন। মামলা তুলে নিতে সেখানে তাকে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। এক পর্যায়ে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হলফনামায় স্বাক্ষর রাখা হয়। তখন আমরা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা সেখানে গিয়ে অবরুদ্ধ অবস্থায় বারের সভাপতির কক্ষ থেকে অলিউল্লাহকে উদ্ধার করেছি। পরে হলফনামায় স্বাক্ষর নেওয়া কাগজ উদ্ধার করা হয়।
নাহিদ আরও বলেন, আন্দোলন করতে গিয়ে আমাদের দলের লোক শহিদ হলো। আবার মামলা তুলে নিতে আওয়ামী আইনজীবীরা ভয়ভীতি দেখাবে তা মানা যায় না।
নরসিংদী জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রিফাত বলেন, আন্দোলনে শহিদ শাওনের ভাই ও মামলার বাদীকে বাড়ি থেকে তুলে নেওয়ার খবর পেয়ে আমরা আইনজীবী সমিতিতে যাই। সেখান থেকে বাদীকে উদ্ধার করে নিয়ে আসি।
এ বিষয়ে জানতে আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট কাজী নাজমুল ইসলামকে ফোন দিলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।