সাবেক এমপি শামীমসহ আ.লীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা
মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:২৩ এএম
নয় মাস আগে উপজেলা ও পৌর বিএনপি কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় পিরোজপুরের-৩ (মঠবাড়িয়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শামীম শাহনেওয়াজ ও তার ভাই জেলা আওয়ামী লীগ সদস্য সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আশরাফুর রহমান এবং অপর ভাই সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান রিয়াজ উদ্দিন আহম্মেদসহ তাদের অনুসারী আওয়ামী লীগের প্রায় ৪০০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
মঠবাড়িয়া থানায় করা ওই মামলায় উপজেলা আওয়ামী লীগের একাংশ সাবেক এমপি শামীম ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আশরাফ অনুসারী এজাহারনামীয় আওয়ামী লীগের ৮৯ ও অজ্ঞাতনামা ২-৩শ’ জনকে আসামি করা হয়েছে।
পৌর যুবদলের সাবেক আহবায়ক ও বিএনপি নেতা নাসির উদ্দিন ডলার বাদী হয়ে পৌর শহরের বালুর মাঠসংলগ্ন উপজেলা ও পৌর বিএনপির দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে বৃহস্পতিবার রাতে এ মামলা করেন।
মামলায় উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান সিফাতসহ ও আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের সাবেক সভাপতি সাধারণসহ পৌরসভা ও উপজেলার ১১ ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের এ মামলায় আসামি করা হয়েছে।
তবে রহস্যজনক কারণে বিভক্ত আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ বিদায়ী উপজেলা চেয়ারম্যান ও তাদের অনুসারীদের কাউকেই এ মামলায় আসামি করা হয়নি।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আশরাফুর রহমানের বড় ভাই শামীম শাহনেয়াজ স্বতন্ত্র এমপি নির্বাচিত হন। এর পর ১৯ জানুয়ারি শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৮৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে পৌর শহরের বালুর মাঠে উপজেলা ও পৌর বিএনপি ওই দিন দুপুরে দলীয় কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
এ সময় মামলার প্রধান আসামি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আশরাফুর রহমান ও তার মেজো ভাই সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান রিয়াজ উদ্দিন আহম্মেদ ও তার বড় ভাই সাবেক স্বতন্ত্র এমপি শামীম শাহ নেওয়াজের নেতৃত্বে প্রায় ৪০০ লোক মিছিল সহকারে ওই দিন দুপুরে পৌর শহরের বালুর মাঠে অবস্থিত উপজেলা ও পৌর বিএনপি অফিস ভাঙচুর করে আসবাবপত্র তছনছ করে।
পরে হামলাকারীরা দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি ভাঙচুর শেষে দলীয় কার্যালয়টি অগ্নিসংযোগ করে পুড়িয়ে দেয়। এতে প্রায় বিশ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়।
এ ব্যাপারে সাবেক এমপি শামীম শাহনেওয়াজ ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আশরাফুর রহমানের মোবাইলে বার বার যোগাযোগ করলেও ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে এ মামলার অন্যতম আসামি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান রিয়াজ উদ্দিন আহম্মেদ মামলায় আনা অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট দাবি করেন।
তিনি বলেন, আমাদেরকে হয়রানি করার জন্য এ মামলা করা হয়েছে।
এদিকে দ্বিধা বিভক্ত আওয়ামী লীগের সভাপতি রফিউদ্দিন আহম্মেদ ফেরদৌস ও সাধারণ সম্পাদক আজিজুল হক সেলিম মাতবর এবং বিদায়ী উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট বায়োজিদ আহম্মেদ খানের অনুসারীদের আসামি করা হয়নি; যা নিয়ে সর্বত্র আলোচনার ঝড় বইছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার বাদী নাসির উদ্দিন বলেন, দ্বিধা বিভক্ত আওয়ামী লীগের দুগ্রুপকে একই মামলায় আসামি করা হলে তারা এক্যবদ্ধ হতে পারে। এজন্য এক গ্রুপকে এ মামলায় আসামি করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের অন্য গ্রুপকে পৃথক মামলায় আসামি করা হবে।
মঠবাড়িয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রেজাউল করিম রাজিব বলেন, আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।