জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন, কাস্টম কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা
রংপুর ব্যুরো
প্রকাশ: ০১ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৫১ পিএম
সরকারি চাকরিকালীন শুল্ক ফাঁকি, ঘুস ও দুর্নীতি করে জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত প্রায় ৯ কোটি টাকা সম্পদ অর্জনের অভিযোগে কারমাইকেল কলেজের সাবেক ভিপি ও কাস্টম কর্মকর্তা আলাউদ্দিন মিয়ার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুদক।
রংপুর সিনিয়র স্পেশাল জজ হায়দার আলীর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। একই অভিযোগে তার ভাই শাহজাদার বিরুদ্ধে একই আদালতে অভিযোগপত্র দায়ের করেছে দুদক।
বৃহস্পতিবার দুর্নীতি দমন কমিশন, রংপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক মো. রুবেল হোসেন অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এরপর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত অভিযোগপত্রটি গ্রহণ কের রোববার জেলা দায়রা জজ আদালতের বিচারক ফজলে খোদা মোহাম্মদ নাজীর শুনানি শেষে অভিযোগপত্রটি বিচারের জন্য গ্রহণ করেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, কাস্টমসে চাকরি করার সময়ে দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০২০ সালে এক ব্যক্তি দুদুকে আবেদন করেন। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রংপুর দুদকের কর্মকর্তারা ছায়া তদন্ত করে প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে নির্দেশনা চেয়ে বিষয়টি দুদকের হাইকমান্ডকে জানানো হয়। তাদের নির্দেশে ২০২৩ সালের ১৬ মে দুদকের রংপুর সমন্বিত কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক নূরে আলম সিদ্দীক বাদী হয়ে আলাউদ্দিন মিয়া ও তার ভাই শাহজাদার বিরুদ্ধে মামলাটি করেছিলেন।
দুদক সূত্রে জানা যায়, আলাউদ্দিন মিয়া আয়কর রিটার্নে ২০১৭-২০১৮ করবর্ষ থেকে ২০২৩-২৪ করবর্ষ পর্যন্ত সম্পদ অর্জন ও দায় দেনা নাই মর্মে ঘোষণা করেছেন। তাতে দেখা যায় তার আয় কর রিটার্ন দাখিলে তিনি সত্য গোপন করেছেন। এ সময়কালে তার সম্পদের খোঁজ করে দুদক আলাউদ্দিন মিয়ার জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত ৫ কোটি ৫৮ লাখ ৭ হাজার ৩০৮ টাকা সম্পদর অর্জনের সত্যতা পেয়েছেন।
একইভাবে তার ভাই মো. শাহাজাদা আয়রকর রিটার্ন ২০১৭-২০১৮ করবর্ষ হতে ২০২৩-২০২৪ করবর্ষ পর্যন্ত আয়কর রিটার্নে প্রদর্শিত মোট আয়ের সাথে মোট অর্জিত সম্পদের গড়মিল খুঁজে পায় দুদক। যার জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত সম্পদের পরিমাণ ৩ লাখ ২৯ হাজার ২৮ লাখ ১৯৪ টাকা; যা তিনি তার ভাই মো. আলাউদ্দিন মিয়ার থেকে হস্তান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে অর্জন করেছেন বলে দুদুক নিশ্চিত হয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে অনুসন্ধান শেষে দুদক আলাউদ্দিন মিয়ার বিরুদ্ধে ৫ কোটি ৫৮ লাখ ৭ হাজার ৩০৮ টাকা ও তার ভাই মো. শাহজাদার বিরুদ্ধে ৩ কোটি ২৯ লাখ ২৮ হাজার ১৯৪ টাকার জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত অর্থের খোঁজ পেয়েছে; যা তারা গোপন করেছেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) রংপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক মো. রুবেল হোসেন বলেন, আলাউদ্দিন মিয়া চাকরিকালীন শুল্ক ফাঁকি দিয়ে ঘুস ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ অর্জন করেছেন বলে তদন্তকালে প্রতীয়মান হয়েছে; যা দুর্নীতি দমন কমিশন আইন-২০০৪ এর ২৭(১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ কারণে আমরা আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছি। আদালত অভিযোগপত্র শুনানি শেষে তা বিচারের জন্য গ্রহণ করেছেন।
এ বিষয়ে আলাউদ্দিন মিয়া বলেন, এসব বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। মামলা হলে আদালত থেকে কাগজ তুললে বিষয়টি জানতে পারব।