ত্বকী হত্যা মামলা: তাবলিগে ছদ্মবেশে থাকা আজমেরীর আত্মীয় গ্রেফতার
যুগান্তর প্রতিবেদন, নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশ: ০১ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৪২ পিএম
নারায়ণগঞ্জে আলোচিত কিশোর তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যা মামলায় আরেকজনকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র্যাব)। তিনি তাবলিগ জামাতের ছদ্মবেশে ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ির রামগড় যাচ্ছিলেন বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার ভোররাতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগাং রোড এলাকায় খাগড়াছড়িগামী একটি বাস থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানান তদন্তকারী সংস্থা র্যাব-১১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল তানভীর মাহমুদ পাশা।
গ্রেফতারকৃত আব্দুল্লাহ আল মামুন ওরফে জামাই মামুন (৪০) বরিশাল সদরের চরমোনাই এলাকার বাসিন্দা আব্দুর রহিমের ছেলে। ত্বকী হত্যা মামলার অন্যতম অভিযুক্ত আজমেরী ওসমানের আত্মীয় বলে জানিয়েছে র্যাব।
আজমেরী ওসমান নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমানের ভাতিজা।
ত্বকী হত্যা মামলায় গ্রেফতার একাধিক আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তারা জবানবন্দিতে এই হত্যাকাণ্ডে গ্রেফতার মামুনের সম্পৃক্ততার কথা জানিয়েছেন। তবে দীর্ঘদিন তিনি ঢাকায় আত্মগোপনে ছিলেন।
মঙ্গলবার ভোররাতে তাবলিগ জামাতের ছদ্মবেশে ঢাকা হতে খাগড়াছড়ির রামগড় যাওয়ার পথে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খাগড়াছড়িগামী বাস হতে আসামিকে গ্রেফতার করা হয় বলে বিকালে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায় র্যাব।
গ্রেফতারের পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠানো হলে আদালত তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন। আদালত রিমান্ড শুনানির জন্য আগামী ৬ অক্টোবর তারিখ ধার্য করেন বলে জানান আদালত পুলিশের পরিদর্শক আব্দুর রশিদ।
২০১৩ সালের ৬ মার্চ শহরের শায়েস্তা খাঁ সড়কের বাসা থেকে বেরিয়ে স্থানীয় একটি পাঠাগারে যাওয়ার পথে অপহরণের শিকার হয় তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী। পরদিন তার ‘এ’ লেভেল পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হয়, যেখানে দেখা যায় ত্বকী পদার্থবিজ্ঞানে সর্বোচ্চ ৩০০ নম্বরের মধ্যে ২৯৭ পেয়েছিলেন। ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনী খাল থেকে ত্বকীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
দীর্ঘ সাড়ে ১১ বছরেও এ হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়নি। তদন্ত শেষ করে আদালতে অভিযোগপত্রও দাখিল করতে পারেনি তদন্তকারী সংস্থা র্যাব।
ত্বকীর পরিবার বরাবরই অভিযোগ করে আসছিলেন- প্রভাবশালী ওসমান পরিবারের সদস্যরা জড়িত থাকায় আওয়ামী লীগের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে এ হত্যাকাণ্ডের বিচার কাজ বন্ধ রয়েছে। তবে ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত এক মাসে এই হত্যা মামলায় ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। তাদের মধ্যে একজন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন।