শ্রেণিকক্ষে প্রশ্নের উত্তর লিখতে দেরি হওয়ায় খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় শিক্ষকের বেত্রাঘাতে জহিরুল ইসলাম জীবন ও কানিজ ফাতেমা বৃষ্টি নামে দুই শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সোমবার বিকালের দিকে আহত দুই শিক্ষার্থীকে মাটিরাঙা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। মাটিরাঙা রেসিডেন্সিয়াল স্কুলে এ ঘটনা ঘটে। আহত শিক্ষার্থী জহিরুল ইসলাম জীবন মাটিরাঙা পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের কাঁঠাল বাগান এলাকার বাবুল মিয়ার ছেলে।

কানিজ ফাতেমা বৃষ্টি একই ওয়ার্ডের চক্রপাড়ার বাসিন্দা এমাদুল হকের মেয়ে। তারা দুজনই মাটিরাঙা রেসিডেন্সিয়াল স্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

আহত শিক্ষার্থী কানিজ ফাতেমা বৃষ্টি জানায়, আমি স্যারের পড়া লিখছিলাম- এ অবস্থায় স্যার বিনা কারণে আমাকে বেত দিয়ে মারধর করেন।

আহত শিক্ষার্থীদের সহপাঠী ও স্বজনরা জানান, সোমবার ৬ষ্ঠ ঘণ্টায় ইসলাম ধর্মের ক্লাস নেন শিক্ষক মো. মাকসুদুর রহমান। তিনি শিক্ষার্থীদের দুইটি প্রশ্নের উত্তর লিখে দিতে তাগিদ দেন। এ সময় জহিরুল ইসলাম একটি প্রশ্ন সহপাঠী থেকে দেখে লেখার চেষ্টা করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শিক্ষক মাকসুদুর রহমান জহিরুল ইসলামকে কিল-ঘুসি মারেন। একই সময়ে ঠিকমতো পড়া বলতে না পারায় কানিজ ফাতেমা বৃষ্টির শরীরের বিভিন্ন স্থানে বেত্রাঘাত করেন ওই স্কুলের সহকারী শিক্ষক মাকসুদুর রহমান।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষকের বিচার চেয়ে জহিরুল ইসলাম জীবনের বড় ভাই নুরুল আলম জুয়েল বলেন, ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তসাপেক্ষে অভিযুক্ত শিক্ষককে আইনের আওতায় আনতে হবে। তিনি সবসময়ই শিক্ষার্থীদের মারধর করেন।

ফোন বন্ধ থাকায় এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক মো. মাকুসুদুর রহমানের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

মাটিরাঙ্গা রেসিডেন্সিয়াল স্কুলের প্রধান শিক্ষক আবছার হোসেন বলেন, আমি অফিশিয়াল কাজে স্কুলের বাহিরে ছিলাম। শিক্ষার্থীদের বেদম মারধরের ঘটনা জানার পর দ্রুত হাসপাতালে ছুটে আসি। কমিটির সঙ্গে কথা বলে অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি। 

মাটিরাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মরত চিকিৎসক ডা. পিয়াসা বড়ুয়া জানান, দুইজন শিক্ষার্থীকে হাসাপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তাদের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

মাটিরাঙ্গায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনজুর আলম বলেন, শিক্ষকের বেত্রাঘাতে দুইজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। এদের মধ্যে কানিজ ফাতেমা বৃষ্টিকে মাটিরাঙা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। আগামীকালই আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করব। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।