Logo
Logo
×

সারাদেশ

ভুল অপারেশনে নারী মৃত্যুর অভিযোগ, তিন লাখ টাকায় রফা

Icon

ফরিদপুর ব্যুরো

প্রকাশ: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:২০ পিএম

ভুল অপারেশনে নারী মৃত্যুর অভিযোগ, তিন লাখ টাকায় রফা

ছবি: যুগান্তর

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় বেসরকারি কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টার অ্যান্ড জেনারেল হাসপাতালে (প্রাইভেট) ভুল অপারেশনে দুই সন্তানের জননীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। গত শনিবার রাত ২টার পর রুমা বেগম (২৬) নামে ওই নারীর মৃত্যু হয়েছে। 

মৃত গৃহবধূ রুমা বেগম পার্শ্ববর্তী গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার দিগনগর ইউনিয়নের পদ্মকান্দা গ্রামের ভ্যানচালক দেলোয়ার শেখের স্ত্রী।  

এ ঘটনায় হাসপাতালের মালিকপক্ষের লোকজনের মাধ্যমে তিন লাখ টাকায় আপস-মীমাংসা হয়েছে বলে পরিবারিক সূত্রে থেকে জানা গেছে। 

স্থানীয়রা জানান, কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক মামুন দুই বছর আগে নিজে অপারেশন করার অপরাধে ছয় মাসের কারাভোগ করেছেন। কারাগার থেকে ছাড়া পেয়ে ক্লিনিক অন্যত্র সরিয়ে স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় আবারও শুরু করে ক্লিনিকের ব্যবসা। 

স্থানীয়দের অভিযোগ, ডাক্তারের নাম দিয়ে তিনি নিজেই সিজার করেন। তিনি বড় ডাক্তার সেজে সিজার করেন। বেশিরভাগ সিজার রাতে করেন তিনি।

মৃত রুমার দেবর তাহের শেখ জানান, আমার ভাই-ভাবির সাত বছরের মেয়ে ও দেড় বছরের ছেলে রয়েছে। তিনি প্রায়ই পেটের ব্যথায় ভুগছিলেন। গত শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) ডাক্তার দেখাতে ভাঙ্গার কেয়ার হসপিটালে যান। সেখানে চিকিৎসকরা দ্রুত আল্ট্রাসনোগ্রাম করাতে বলেন। আল্ট্রাসনোগ্রাম করানোর পরে চিকিৎসকরা এপেন্ডিসাইটিস হয়েছে বলে রাতেই অপারেশনের সময় দেন। যে চিকিৎসক দিয়ে অপারেশনের কথা বলা হয়েছে তাকে দিয়ে অপারেশন না করিয়ে অন্যকে দিয়ে অপারেশন করানো হয়। অপারেশনের পর ভাবির অবস্থার অবনতি হলে রাত ১০টার দিকে তারা (কেয়ার হসপিটালের লোকজন) ফরিদপুরে রেফার্ড করেন। 

তিনি বলেন, ফরিদপুর হাসপাতালে নেওয়ার পথেই গাড়িতে ভাবি মারা যান। রাত ১১টার দিকে কেয়ার হসপিটালে পৌঁছলে আমাদের তড়িঘড়ি করে লাশ দেশের বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। আমাদের একটা মিনিটও সেখানে দাঁড়াতে দেয়নি। 

এ বিষয়ে রামেরচর গ্রামের ৭নং ওয়ার্ডের (চরযোশরদী ইউনিয়ন) মেম্বার সরোয়ার হোসেন জানান, আমাদের গ্রামের মিজান মাতুব্বরের মেয়ে রুমা বেগমের অপারেশন করতে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে বলে শুনেছি।

এদিকে স্থানীয় শামীম মুনসি তার ফেসবুক আইডি থেকে বলেন, এই কেয়ার হসপিটালে মাঝে মাঝেই তারা ভুল চিকিৎসায় রোগী মেরে ফেলেন, এর কোনো বিচার হয় না। প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় প্রতিবারই তারা পার পেয়ে যান। তিনি ফরিদপুর সিভিল সার্জনের কাছে কেয়ার হসপিটালের মালিক মামুন ডাক্তারের বিচার ও তাদের লাইসেন্স বাতিলের দাবি জানান। 

নিহতের ভাসুরের ছেলে জোবায়ের আহমদ জানান, চাচা একজন ভ্যানচালক। কেয়ার হসপিটালের মালিক পক্ষরা আমার অসহায় চাচাদের মুখ বন্ধ রাখতে হুমকি দিয়ে গেছেন। এ কারণেই চাচা তাদের ভয়ে মুখ খুলছে না। 

এ ঘটনায় কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টার অ্যান্ড জেনারেল হাসপাতালের মালিক মামুন মিয়া ওরফে মামুন ডাক্তারের বক্তব্য নিতে স্থানীয় সাংবাদিকরা হাসপাতালে গেলে তাকে না পেয়ে ফিরে আসেন। পরে তার মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

ভাঙ্গা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তরুণ কুমার পাল বলেন, এ ঘটনায় কোনো অভিযোগ পাইনি, অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জেলা সিভিল সার্জন ডা. সাজেদা বেগম বলেন, এমন ঘটনা ঘটে থাকলে অবশ্যই তদন্তপূর্বক আইনের আওতায় আনা হবে।

Jamuna Electronics
wholesaleclub

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম