Logo
Logo
×

সারাদেশ

শতকোটি টাকার মালিক সেই প্যানেল চেয়ারম্যানকে অপসারণ

Icon

কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৫০ পিএম

শতকোটি টাকার মালিক সেই প্যানেল চেয়ারম্যানকে অপসারণ

অবৈধ উপায়ে শতকোটি টাকার মালিক বনে যাওয়া কেরানীগঞ্জের কোন্ডা ইউনিয়ন পরিষদের ৬নং ওয়ার্ড মেম্বার মো. রাসেলকে পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান পদ হতে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

৫ আগস্ট সরকারের পটপরিবর্তনের পর তাকে কোন্ডা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান করা হয়েছিল। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে বিতর্কিত ভূমিকার জন্য এলাকার ছাত্র-জনতার মাঝে এ নিয়ে প্রচণ্ড ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। তারা রাসেলের অপসারণ দাবিতে পরিষদ ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেন।

অবশেষে বিষয়টি আমলে নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যকর থেকে এক প্রজ্ঞাপনে চেয়ারম্যান পদে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্ব পালনের কথা বলা হয়। এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে রোববার শত শত লোক ইউনিয়ন পরিষদের সামনে জড়ো হয়ে আনন্দ মিছিল করে এলাকায় মিষ্টি বিতরণ করেন।

জানা যায়, দরিদ্র পরিবারে বেড়ে উঠা রাসেল মিয়া এক সময় পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ করতেন। সেই সূত্রে এলাকার আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকা আমজাদ নামে এক ব্যক্তির হাত ধরে ২০১১ সালে ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার হন। এক সময় সাবেক  বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদকে ‘খুশি’ করে কোন্ডা ইউনিয়ন ৬নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতির পদ বাগিয়ে নেন। কয়েক বছরে বিস্ময়কর উত্থান হয় রাসেল মিয়ার। চলেন বিলাসবহুল গাড়িতে। আছে চোখ ধাঁধানো বাগানবাড়ি। কয়েকটি ব্যাংক হিসাবে রয়েছে কোটি কোটি টাকা। মালিক হয়েছেন ৬টি ইটভাটা ও ২টি ডকইয়ার্ডের। দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) জমা পড়া অভিযোগে তার বিরুদ্ধে এসব তথ্য উত্থাপন করা হয়েছে।

২০২১ সালের ১৩ ও ৩১ অক্টোবর দুদকে রাসেলের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি অভিযোগের চিঠি জমা দিয়েছেন মোকাররম হোসেন নামে এক ব্যক্তি। সেখানে রাসেলের দুর্নীতি, জবরদখল ও অনিয়মের মাধ্যমে শতকোটি টাকার সম্পদ অর্জনের বিবরণ তুলে ধরে অভিযোগ উত্থাপন করা হয়।

রোববার আনন্দ মিছিলের সময় উত্তর পানগাঁও বাসিন্দা নাজমুল, কাওটাইল এলাকার বাসিন্দা নিলয়সহ কয়েকজন এলাকাবাসী রাসেলের এসব অপকর্মের তথ্য তুলে ধরেন।

তারা আরও জানান, এলাকার ইউপি সদস্য হওয়ার পর ভূমি জবরদখল ও জাল-জালিয়াতির কারবার শুরু করেন রাসেল। আর এর মাধ্যমে বনে যান শতকোটি টাকার মালিক। সাধারণ মানুষের জমি দখল, চাঁদাবাজি, অন্যের জমি থেকে জোর করে মাটি কেটে বিক্রি করা তার পেশা। আয়ের বৈধ তেমন কোনো উৎস না থাকলেও গত কয়েক বছরে রাসেল বিপুল স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন। তার ভাই হাবিবুর রহমান রানা ও মোস্তাক আহম্মদ রাজুকে সঙ্গে নিয়ে ভাই ভাই ব্রিকস নামে নিজ এলাকায় ৬টি ইটভাটা দিয়েছেন। আরও আছে ভাই ভাই ডকইয়ার্ড ও রাসেল ট্রেডার্স নামে দুটি ডকইয়ার্ড। এর বাইরে প্রায় ৫০টি দলিলে অন্তত ১ হাজার শতাংশ জমি নিজ নামে রেজিস্ট্রেশন করেছেন। ব্রাহ্মণগাঁওয়ে হিন্দুদের রথখোলার মঠ ভেঙে প্লট তৈরি করে বিক্রি করেছেন।

বিপুল অঙ্কের টাকা পাচার করেছেন মালয়েশিয়া ও দুবাইয়ে। সেখানে সেকেন্ড হোম গড়ার খবরও চাউর রয়েছে এলাকায় লোকমুখে।

তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, হিন্দুদের জায়গা-জমি ফাঁকা দেখলেই কৌশলে নিজে মালিক সেজে দখল করে নেন রাসেল। এছাড়া জমি নিয়ে জটিলতা নিরসনে মেম্বার হিসেবে হিন্দুরা তার কাছে সালিশ নিয়ে গেলে নিজেই কৌশলে ঢুকে পড়ে জমির মালিক বনে যান। স্থানীয় ভূমি রেজিস্ট্রি কার্যালয়ে থাকা তার নিজস্ব লোকের মাধ্যমে এসব জালিয়াতি করতেন।

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে রাসেলের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম