আ.লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত অর্ধশতাধিক
সালথা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:৫৯ পিএম
কিশোর-কিশোরীর মধ্যে ঝগড়ার জেরে ফরিদপুরের সালথায় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে ৩০ জনকে হাসাপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের মেম্বার গট্টি এলাকায় সালথা-ফরিদপুর আঞ্চলিক সড়কের উপর প্রায় পাঁচ ঘণ্টাব্যাপী এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের সময় পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এ সময় ওই সড়কে বন্ধ হয়ে যায় যানবাহন চলাচল।
স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, এলাকার আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মেম্বার গট্টি গ্রামের বাসিন্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মো. রফিক মাতুব্বরের সঙ্গে গট্টি ইউনিয়ন কৃষকলীগের সভাপতি মো. আজিজ মোল্যার বিরোধ চলে আসছিল। শুক্রবার বিকেলে রফিকের সমর্থক নুরুল ইসলামের ছেলের সঙ্গে আজিজের সমর্থক মুকুলের মেয়ের ঝগড়া হয়। এ নিয়ে সন্ধ্যায় উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
শনিবার সকাল ৬টার দিকে রফিকের বাড়ির সামনে সালথা-ফরিদপুর সড়কের উপর উভয়পক্ষের অন্তত পাঁচ শতাধিক সমর্থকরা দেশীয় অস্ত্র ঢাল-কাতরা, টেটা, ভেলা ও লাঠিসোটা নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। একপর্যায় সংঘর্ষে আশপাশের অন্তত ১০টি গ্রামের মানুষ অংশ নেয়। এতে সংঘর্ষের রূপ বড় আকার ধারণ করে। সকাল ৬টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত চলে এ সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া।
এ সময় পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। আতঙ্কে স্থানীয় নারী ও শিশুরা এদিক ওদিক ছুটাছুটি করতে থাকে। সংঘর্ষের সময় রফিক ও আজিজের বসতবাড়িতে হামলা পাল্টা হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে অন্তত ৩০ জনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সংঘর্ষ চলাকালে ঘটনাস্থলে একদল পুলিশ উপস্থিত থাকলেও তারা নিরব দর্শকের ভূমিকায় একপাশে দাঁড়িয়ে ছিল বলে জানা গেছে। যে কারণে সালথা-ফরিদপুর সড়কে অন্তত ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। পরে সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি সামাল দিয়ে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করেন।
এ ঘটনায় বক্তব্য নেওয়ার জন্য উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য রফিক মাতুব্বর ও গট্টি ইউনিয়ন কৃষকলীগের সভাপতি আজিজ মোল্যার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি। এমনকি তাদের ফোনও বন্ধ পাওয়া যায়।
ফরিদপুরের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল-নগরকান্দা) মো. আসাদুজ্জামান শাকিল বলেন, কয়েক ঘন্টাব্যাপী চলে সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর একটি টিম ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে সংঘর্ষকারীদের বাড়িতে পুলিশ ও সেনাবাহিনী যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে বিপুলসংখ্যক দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করে। এলাকার পরিবেশ শান্ত রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।