ইমামতি নিয়ে দ্বন্দ্বে চাচাকে হত্যা, ভাতিজা গ্রেফতার
নেত্রকোনা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:৩৯ পিএম
নেত্রকোনার পূর্বধলায় ইমামতি নিয়ে দ্বন্দ্বে চাচাকে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় শাহজাহানকে (৩৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার সকাল ৭টার দিকে ঢাকার ধামরাই এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এর আগে গত মঙ্গলবার ফজরের নামাজের ইমামতি নিয়ে দ্বন্দ্বে চাচা হাসিম উদ্দিনকে (৬৫) কিল-ঘুসি দেন ভাতিজা শাহাজাহান। এতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় হাসিম উদ্দিনের। গ্রেফতার এড়াতে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান শাহজাহান।
পরে এ ঘটনায় নিহত হাসিম উদ্দিনের স্ত্রী মাজেদা খাতুন বাদী হয়ে শাহজাহানকে একমাত্র আসামি করে পূর্বধলা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। গ্রেফতার শাহজাহান পূর্বধলা উপজেলার আগিয়া ইউনিয়নের জটিয়াবর গ্রামের মৃত আব্দুল লতিফের ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই উপজেলার জটিয়াবর মধ্যপাড়া জামে মসজিদের নির্ধারিত ইমাম মাওলানা শামীম হোসেন। তার অনুপস্থিতিতে প্রায়ই মসজিদে নামাজ পড়াতেন গ্রামের হাসিম উদ্দিনের ছেলে হাফেজ মো. আজিজুল হক (৩৫)। গত মঙ্গলবার ফজরের নামাজ পড়ানোর সময় ইমাম শামীম হোসেন অনুপস্থিতি ছিলেন।
এ সময় আজিজুল হক নামাজ পড়াতে গেলে তার সম্পর্কিত চাচাতো ভাই শাহজাহান মিয়া এতে আপত্তি জানায়। আজিজুল ও শাহজাহানের মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিরোধ চলছিল। শাহজাহান আজিজুলের পেছনে নামাজ না পড়ে মসজিদের বারান্দায় একা নামাজ আদায় করেন।
নামাজ শেষ হলে মসজিদ প্রাঙ্গণে আজিজুল ও শাহজাহানের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এ সময় আজিজুলের বাবা হাসিম উদ্দিন উভয়কে থামতে বললে ভাতিজা শাহজাহান তার প্রতি চড়াও হন। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে শাহজাহান হাসিম উদ্দিনকে বেধড়ক কিল-ঘুসি মারলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই মারা যান।
হাসিম উদ্দিনের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে দুইপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
পুলিশ জানায়, গ্রেফতার এড়াতে শাহজাহান এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান। আসামি গ্রেফতারে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও থানা পুলিশের সমন্বয়ে একটি টিম গঠন করে দেন পুলিশ সুপার মির্জা সায়েম মাহমুদ।
গোপন সংবাদ ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় শাহাজাহানের অবস্থা ঢাকার ধামরাই এলাকার মালঞ্চ গ্রামে শনাক্ত করা হয়। পরে শুক্রবার সকালে ডিবি পুলিশের পরিদর্শক মো. শাহানুর আলমের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে শাহজাহানকে গ্রেফতার করা হয়।
জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) মো. লুৎফর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, তার বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।