ফোর মার্ডার মামলায় কাদের মির্জা-ইউএনও-ওসিসহ আসামি ১১২
কোম্পানীগঞ্জ (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:৫৬ পিএম
২০১৩ সালে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভায় জামায়াত-শিবিরের চার নেতাকর্মীকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় আদালতে একটি মামলার আবেদন করা হয়েছে। আদালত অভিযোগটি আমলে নিয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলায় ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই বসুরহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আবদুল কাদের মির্জা, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল ও সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুরুজ্জামানসহ ১১২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরও একাধিক ব্যক্তিকে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রামপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা নিহত জামায়াত কর্মী সাইফুল ইসলামের বড় ভাই মো. আমিরুল ইসলাম বাদী হয়ে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের ৮ নম্বর আমলি আদালতে মামলার আবেদনটি দায়ের করেন। আদালতের বিচারক মো. ইকবাল হোসেন অভিযোগটি তদন্ত করে মামলা হিসেবে (এফআইআর) রেকর্ড করতে কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন।
বাদীর আইনজীবী ও জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট এবিএম জাকারিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই বসুরহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র আবদুল কাদের মির্জা ও তৎকালীন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নুরুজ্জামান, থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শফিকুল ইসলামসহ ১৯ পুলিশকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বাদী আমিরুল ইসলাম জানান, ২০১৩ সালের ১৪ ডিসেম্বর বিকালে জামায়াত নেতা কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকরের প্রতিবাদে বসুরহাট বাজারে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা। এতে আবদুল কাদের মির্জার নেতৃত্বে তার সহযোগী ও পুলিশ অস্ত্র হাতে মিছিলে হামলা চালায়। কাদের মির্জা ও ইউপি চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিন মিকনের গুলিতে সাইফুল ইসলাম ঘটনাস্থলেই নিহত হন।
এছাড়াও ছাত্রলীগ নেতা নাজিম উদ্দিন মুন্না ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলের গুলিতে চরহাজারীর আবদুর রাজ্জাকের ছেলে আবদুল আজিজ রায়হান নিহত হন। সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আজম পাশা চৌধুরী রুমেল, কাদের মির্জার ভাগিনা ফখরুল ইসলাম রাহাত ও সাবেক কাউন্সিলর আবুল খায়েরের গুলিতে চরকাঁকড়ার আবুল কাশেমের ছেলে সাইফুল ইসলাম বাবুল মারা যান।
অন্যদিকে একই সময় তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নুরুজ্জামানের নির্দেশে পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সফিকুল ইসলাম, এসআই শিশির কুমার, এএসআই উ ক্য সিং মারমার গুলিতে বসুরহাট পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের আবদুর রহমানের ছেলে মতিউর রহমান সজিব নিহত হন।
মামলার বাদী মো. আমিরুল ইসলাম বলেন, আমি এবং আমার ভাই সাইফুল ইসলাম জামায়াতের সক্রিয় কর্মী। আমরা ঘটনার সময় দলের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিক্ষোভ মিছিলে অংশগ্রহণ করি। এতে কাদের মির্জার নেতৃত্বে তার সহযোগী ও প্রশাসনের গুলিতে আমার ভাইসহ চারজন ঘটনাস্থলেই মারা যান। ঘটনার পর আমরা এ হত্যার বিচার চাইলেও আসামিরা ক্ষমতাবান রাজনৈতিক প্রভাবশালী হওয়ায় কোনো বিচার পাইনি। এমনকি গত ১১ বছর ভুক্তভোগী নিহতদের পরিবারের লোকজন বাড়িঘরেও থাকতে পারেননি বলেও অভিযোগ করেন তিনি।